নেই নিকাশির বালাই। সামান্য বৃষ্টিতে জল থইথই বাঁকুড়া শহরের মল্লেশ্বরপল্লি। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
রাস্তার পাশে নিকাশি নালা তৈরির দাবি দীর্ঘদিনের। অথচ আজও তা হয়নি। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই জল থইথই হল বাঁকুড়ার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের মল্লেশ্বরপল্লি। আর পুরভোটের মুখে তাতে নতুন করে অস্বস্তি বাড়ল শাসকদলে।
মঙ্গলবার বিকেলে বৃষ্টিতে জল জমেছে মল্লেশ্বরপল্লির সামনে হিন্দুস্কুল এলাকা থেকে দুর্গাপুর বাইপাস যাওয়ার রাস্তার উপরে। বুধবার সকালে এলাকায় গিয়েই দেখা গেল, সেই জমা জলের উপর দিয়েই যাতায়াত করছেন লোকজন। মোটরবাইক বা গাড়ি নিয়ে পারাপার করলেই কর্দমাক্ত জলের ছিটে এসে লাগছে পথচারীদের গায়ে। মল্লেশ্বরপল্লির বাসিন্দা রাজু বাগদি একরাশ ক্ষোভ নিয়ে বললেন, “অল্প বৃষ্টিতেই এই অবস্থা! তাহলে বর্ষাকালে আমরা কী ভাবে থাকি বুঝুন। জল-কাদার রাস্তা পারাপার করতে গিয়ে কত পথচারী যে আছাড় খান, তার ইয়ত্তা নেই।” এলাকাবাসী তারাপদ মিত্র, মথুর বাগদিরা জানান, এই জল পার হতেই দিন সাতেক লাগবে। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘কতবার আমরা এখানে নালা গড়ার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু আমাদের কথা কানেই তোলেননি কাউন্সিলর।” একই ক্ষোভ ঝরে পড়ছে মল্লেশ্বরপল্লির বাসিন্দা অজিত গড়াইয়ের কথাতেও। তাঁর অভিযোগ, “ভোটের সময় হাত জোড় করে আমাদের ঘরে গিয়ে ভোট চেয়েছিলেন কাউন্সিলর। কিন্তু সমস্যার কথা বলতে গেলে তাঁর শোনার সময় থাকত না। আশ্বাসটুকুও তিনি আমাদের দেননি।”
পাশের জেলা পুরুলিয়ার জনবহুল কোর্টমোড়েও একই দুরাবস্থায় পথচারীরা। ছবি: সুজিত মাহাতো
উল্লেখ্য, গত পুরনির্বাচনে ২০ নম্বর ওয়ার্ডটি ছিল তৃণমূলের দখলে। ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন দেবদাস দাস। তিনি এ বার এই ওয়ার্ডে না দাঁড়িয়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে দাঁড়িয়েছেন। তাই প্রচারে বেরিয়ে এলাকার অনুন্নয়ন নিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়ছেন এই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অভিজিৎ দত্ত। মল্লেশ্বরপল্লির সামনে নালা গড়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে মেনে নিচ্ছেন তিনিও। তাঁর কথায়, “মানুষের ক্ষোভ আছে। তবে আমাদের বিদায়ী বোর্ড অনেকটাই কাজ করেছে। পাঁচ বছরে এলাকার সব সমস্যা মেটানো সম্ভব নয়। ফের ক্ষমতায় এলে আগামী পাঁচ বছরে অবশিষ্ট কাজগুলো আমরা সেরে ফেলব।” মল্লেশ্বরপল্লির সামনের রাস্তার পাশে নালা গড়ারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
যদিও তৃণমূলের প্রার্থীর আশ্বাসে এলাকার বাসিন্দাদের আর ভরসা করতে মানা করছেন এই ওয়ার্ডের সিপিএমের প্রার্থী চণ্ডদাস নিয়োগী। তিনিও এই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর। তাঁর অভিযোগ, “দেবদাসবাবু কাউন্সিলর আর অভিজিৎবাবু ছিলেন ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদক। ওই রাস্তাটা কয়েক মাস আগেই পিচের রাস্তা করা হল। তাহলে তখন নিকাশি ব্যবস্থা করা হল না কেন? দু’জনেই আসলে চেষ্টা করেননি।’’ দেবদাসবাবুর অবশ্য দাবি, ‘‘ওই এলাকায় নালা করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু জায়গা পাওয়া যায়নি। স্থানীয় কয়েকজনও জায়গা দেননি। সাধ্যমতো উন্নয়ন করেছি।’’