আদ্রায় যুবক খুন

রেল সিন্ডিকেটের আঁচ দেখছে পুলিশ

ব্যক্তিগত শত্রুতা নাকি রেলের ঠিকাদারি ব্যবসায় সিন্ডিকেট সংক্রান্ত বিরোধ? আদ্রার ব্যবসায়ী তথা রেলের ঠিকাদার পিন্টু বর্মাকে খুনের কারণ নিয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আদ্রা শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৬ ০১:৪৩
Share:

ব্যক্তিগত শত্রুতা নাকি রেলের ঠিকাদারি ব্যবসায় সিন্ডিকেট সংক্রান্ত বিরোধ? আদ্রার ব্যবসায়ী তথা রেলের ঠিকাদার পিন্টু বর্মাকে খুনের কারণ নিয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। খুনের পরে ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও শনিবার পর্যন্ত পুলিস কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। নিহতের পরিবার অবশ্য এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে।

Advertisement

রঘুনাথপুরের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নিহত যুবকের পরিবার একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু ওই ব্যক্তি ঘটনায় জড়িত রয়েছেন বলে বিশদ তথ্য, প্রমাণ মেলেনি। পিন্টু নিজেও একটি খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন। ফলে সমস্ত দিক মাথায় রেখেই তদন্ত শুরু হয়েছে।”

শুক্রবার বেলা ১১টা নাগাদ আদ্রার রেলওয়ে গার্লস হাইস্কুলের পাশের রাস্তায় দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন পিন্টু বর্মা। আততায়ীরা খুব কাছ থেকে পরপর গুলি করে খুন করে চম্পট দেয়। প্রকাশ্য দিবালোকে ফের খুনের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় রেলশহরে। শুক্রবারই ঘটনাস্থলে তদন্তে যান এসডিপিও-সহ জেলা পুলিশের কর্তারা। পরে আদ্রায় আসেন পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার।

Advertisement

কিন্তু কেন এই খুন, সে বিষয়ে এখনও অন্ধকারে পুলিশ। সব্জি ব্যবসায়ী পিন্টু রেলের ঠিকাদারি সংক্রান্ত সিন্ডিকেটের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে জড়িত ছিল বলে তদন্তে জেনেছে পুলিশ। তিন বছর আগে সন্ধ্যায় আদ্রার সব্জি বাজারের কাছে জনবহুল এলাকায় খুন হয়েছিলেন সঞ্জীব সিংহ ওরফে বাবু নামের এক যুবক। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল পিন্টুর বিরুদ্ধে। তাকে গ্রেফতারও করেছিল পুলিশ। পরে জামিনে ছাড়া পান তিনি। ওই খুনের ক্ষেত্রেও উঠে এসেছিল রেলের ঠিকাদারি সংক্রান্ত সিন্ডিকেটের বিষয়টি। ফলে ঠিক কী কারণে পিন্টুকে খুন করা হয়েছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গিয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, নিহত যুবকের পরিবার অভিযোগে জানিয়েছেন, আড়রা গ্রামের বাসিন্দা এক ব্যক্তির সঙ্গে সম্প্রতি পিন্টুর কিছু টাকা নিয়ে বিবাদ হয়েছিল। সম্প্রতি সে ফোনে পিন্টুকে খুনের হুমকিও দিয়েছিল। তবে পুলিশের দাবি, ফোনে খুন করার হুমকি দিলেও ওই ব্যক্তিই যে পিন্টুকে খুন করেছে, এমন কোনও প্রমাণ বা তথ্য তাঁদের কাছে আসেনি। তা ছাড়া ওই ব্যক্তি দীর্ঘদিন আদ্রায় নেই। কর্মসূত্রে অন্যত্র থাকেন।

বরং পুলিস মনে করছে, এই খুনের ঘটনায় রেলের সিন্ডিকেট সংক্রান্ত বিরোধ থাকতে পারে। বিশেষ করে নিহত যুবকের অতীত ঘেঁটে সিন্ডিকেটের ব্যবসায় পিন্টুর ঘনিষ্ঠ ভাবে জড়িত থাকার বেশ কিছু তথ্য প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। আদ্রায় রেলের সিন্ডিকেট মূলত পরিচালিত হয় ভিন্‌রাজ্য থেকে। পিন্টুর সঙ্গে ওই সিন্ডিকেটের মাথাদের যোগাযোগ ছিল বলে দাবি করেছে পুলিশ। সে ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট সংক্রান্ত কোনও সমস্যাই খুনের কারণ বলে মনে করেছে পুলিশের একাংশ। সেই সঙ্গে যে ভাবে এই যুবককে খুন করা হয়েছে তার সঙ্গে অতীতে সিন্ডিকেটের বিরোধে হওয়া খুনের ঘটনাগুলির সঙ্গে মিল দেখতে পাচ্ছেন পুলিশ আধিকারিকরা। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আগে আদ্রায় রেলের সিন্ডিকেটের বিরোধে যতগুলি খুন হয়েছে প্রতি ক্ষেত্রেই মোটরবাইকে চেপে আততায়ীরা এসে খুব কাছ থেকে পরপর গুলি করে খুন করেছে। পিন্টুর ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতিতে খুন হয়েছে। পদ্ধতি দেখে মনে হচ্ছে, এ বারেও পেশাদার ভাড়াটে খুনি ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে অন্য সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement