manbazar

আবাস-ক্ষোভে ইস্তফাপত্র জমা পঞ্চায়েত সদস্যদের

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (প্লাস) তালিকা গ্রামসভায় পাঠ করার পরেও কিছু লোকের নাম বাদ যাওয়ায় পঞ্চায়েতগুলি অসন্তোষের মুখে পড়ছে।

Advertisement

সমীর দত্ত

মানবাজার শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:১৬
Share:

ইস্তফাপত্র (উপরে) জমা দেওয়া বিশরীর ৮ পঞ্চায়েত সদস্যা। নিজস্ব চিত্র

আবাস যোজনা নিয়ে বিতর্কের আবহে জনতার ‘ক্ষোভের’ আশঙ্কায় পঞ্চায়েত সদস্যদের গণইস্তফা দেওয়ার প্রবণতা দিকে দিকে ছড়াচ্ছে। এ বার একই ঘটনা দেখা গেল মানবাজার ১ ব্লকেও। বিশরী পঞ্চায়েতের আট তৃণমূল সদস্য শুক্রবার বিকেলে বিডিও-র (মানবাজার ১) কাছে ইস্তফাপত্র জমা দিলেন। একই সঙ্গে বিশরী পঞ্চায়েতের বাসিন্দা তথা মানবাজার ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি দিলীপ পাত্র-সহ তিন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যও ইস্তফাপত্র জমা দেন।

Advertisement

বিডিও (মানবাজার ১) মোনাজকুমার পাহাড়ির দাবি, ‘‘ইস্তফাপত্র গৃহীত হয়নি। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’’ যদিও পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি দিলীপের দাবি, ‘‘ইস্তফাপত্র প্রত্যাহার করার প্রশ্নই নেই। যদি বাতিল করা ১২৮ জনকে আমরা আবাস যোজনার অন্তর্ভুক্ত করতে পারি, তবেই মত বদলাতে পারি।’’ তৃনমূলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘কেউ পদত্যাগ করবেন না। দিলীপবাবু এবং ওই পঞ্চায়েত সদস্যদের বোঝানো হচ্ছে।’’

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (প্লাস) তালিকা গ্রামসভায় পাঠ করার পরেও কিছু লোকের নাম বাদ যাওয়ায় পঞ্চায়েতগুলি অসন্তোষের মুখে পড়ছে। তাতে অবশ্য পঞ্চায়েতের হাত নেই বলে অনেকে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের দিকে দায় ঠেলছেন। গণইস্তফাপত্র জমা দিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুর ২ ব্লকের মালিহাটি পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান, উপপ্রধান-সহ পঞ্চায়েতের ১৭ জন সদস্যও। সেই ইস্তফা গৃহীত হয়নি। পরে সেই অগৃহীত ইস্তফাপত্রটিও তাঁরা ফিরিয়ে নেন।

Advertisement

সেই ছোঁয়া লাগে পুরুলিয়া জেলাতেও। কিছু দিন আগে ঝালদা ১ ব্লকের বিভিন্ন দলের ১০ পঞ্চায়েত প্রধান উদ্বেগ প্রকাশ করে ব্লক প্রশাসনকে চিঠি দেন। একই কারণে গণইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন মানবাজার ২ ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত বারী-জাগদা পঞ্চায়েতের সদস্যরাও। তাঁদের লেখা ইস্তফাপত্রের ছবি সমাজ-মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে দলের পরামর্শে তাঁরা মত বদলান।

বিশরী পঞ্চায়েতের আট সদস্যের ইস্তফাপত্রে দাবি করা হয়েছে, ‘আবাস প্লাসের যে তালিকা আমরা গ্রামসভায় প্রকাশ করেছিলাম, তা থেকে ১২৮ জনের নাম পরে অজ্ঞাতকারণে জেলা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। মানুষকে এর জবাব দেওয়ার ভাষা না থাকায় আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য পদত্যাগ করতে চাই’।

এ দিন দুপুরে বিশরী পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান-সহ আট তৃণমূল সদস্য কয়েকশো কর্মী-সমর্থকের মিছিল করে ব্লক অফিসে যান। ব্লক অফিস চত্বরে ঘণ্টা খানেক অবস্থান বিক্ষোভ চলে। বিশরী পঞ্চায়েতের প্রধান সজ্জিতা বেসরার দাবি, গ্রামসভার বৈঠক করে পঞ্চায়েত এলাকার ৪৭০ জনের নাম আবাস যোজনার উপভোক্তা হিসাবে ব্লক অফিসে তাঁরা পাঠান। তার মধ্যে ১২৮ জনের নাম বাতিল করা হয়েছে বলে তাঁদের জানানো হয়।

তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিডিও-র কাছে ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছি। আমাদের দাবি মেনে এই পঞ্চায়েতের বাতিল হওয়া ১২৮ জনকে আবাস যোজনায় অন্তর্ভুক্ত করলে পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নেব। না হলে আর পঞ্চায়েতে ফিরছি না।’’ এক পঞ্চায়েত সদস্য বলেন, ‘‘আমাদের পাঠানো তালিকা যদি প্রশাসন কেটে দেয়, তাহলে আমাদের পদে থেকে লাভ কী?’’

তাঁদের সুরেই পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি দিলীপ পাত্র বলেন, ‘‘পদে থেকে যদি মানুষের কাজে না লাগতে পারি, তাহলে পদ আঁকড়ে লাভ কী?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement