বন দফতরের ক্য়ামেরাবন্দি সেই চিতাবাঘ। নিজস্ব চিত্র।
পুরুলিয়ার কোটশিলার জঙ্গলে পাতা ট্র্যাপ ক্যামেরায় চিতাবাঘের ছবি ধরা পড়তেই সক্রিয় হল রাজ্য বন দফতর। সিমনি বিট এবং লাগোয়া জঙ্গলে শুরু হয়েছে ২৪ ঘণ্টার নজরদারি। চিতাবাঘের ছবি-সহ ওই জঙ্গলের চরিত্র সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানিয়ে অরণ্য ভবনে রিপোর্ট পাঠানোর পাশাপাশি চলছে ‘ট্র্যাকস অ্যান্ড ট্রেল’ পদ্ধতিতে ধারাবাহিক তথ্য সংগ্রহের কাজও।
বন দফতর জানা গিয়েছে ২০১৫ সালের ২০ জুন কোটশিলা বনাঞ্চলেরই টাটুয়াড়া এলাকায় একটি চিতাবাঘ লোকালয়ে চলে আসার পর তাকে মেরে গাছে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন স্থানীয় গ্রামবাসীদের একাংশ। এ বার তাই চিতাবাঘের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হতেই বন দফতরের তরফে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দু’য়েক ধরেই কোটশিলা বনাঞ্চলের সিমনি বিটের অন্তর্গত জঙ্গলের সিমনি, হরতান, তহদ্রি, জাবর ও কড়িয়রের জঙ্গল লাগোয়া এলাকা থেকে গায়েব হয়ে যাচ্ছিল গ্রামবাসীদের গরু, ছাগল, ভেড়া।
এর পর জঙ্গলে পাতা কুড়াতে গিয়ে স্থানীয়দের অনেকে গরু-ছাগলের হাড় ও কঙ্কাল পড়ে থাকতে দেখেন। এরপরই স্থানীয়েরা নিশ্চিত হন, জঙ্গলে হিংস্র কোনও বন্যপ্রাণী রয়েছে। স্থানীয়রা বিষয়টি বনকর্মীদের নজরে আনলে ওই এলাকায় ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানোর হয় দফতরের তরফে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি সেই ট্র্যাপ ক্যামেরাতেই ধরা পড়ে একটি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘের ছবি।
বনকর্মীদের একাংশের ধারণা, ট্র্যাপ ক্যামেরায় একটি চিতাবাঘের ছবি ধরা পড়লেও ওই জঙ্গলে একাধিক চিতাবাঘ থাকার সম্ভাবনা প্রবল। পুরুলিয়ার বিভাগীয় বনাধিকারিক (ডিএফও) দেবাশিস শর্মা বলেন, ‘‘কোটশিলার জঙ্গলে চিতাবাঘ রয়েছে এটি আমাদের কাছে অত্যন্ত ভালো খবর। চিতাবাঘটি গভীর জঙ্গলে রয়েছে। এতে ভয়ের কোনো কারণ নেই। ২০১৫ র ঘটনার কথা মাথায় রেখে আমরা বিভিন্ন ভাবে এলাকার মানুষকে সচেতন করছি। পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে বৈঠক করে ও মাইক প্রচার চালিয়ে সচেতন করা হচ্ছে। আপাতত ওই জঙ্গলে স্থানীয়দের যেতে নিষেধ করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই জঙ্গলে আর কোনও চিতাবাঘ রয়েছে কিনা তা জানার জন্য ট্র্যাপ ক্যামেরার সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।’’