Purulia

খুলল দোকানপাট, শহরের পথে জনতার ঢল

পুরুলিয়া শহরে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে এ দিন পুলিশকে মাইক হাতে পথে নামতে হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২০ ০৬:৫৮
Share:

পুরুলিয়া শহরে। নিজস্ব চিত্র

নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার বালাই নেই। চায়ের দোকান থেকে মুদির দোকান—সর্বত্রই ঠাসাঠাসি ভিড়। বাজারহাটে সেই চেনা ব্যস্ততা। রাস্তায় যানজট।

Advertisement

করোনা-মানচিত্রে ‘গ্রিন জ়োন’-এ থাকা বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলায় ‘লকডাউন’ কিছুটা শিথিল হয়েছে সোমবার থেকে। তারপর থেকে রাস্তায় দেখা যাচ্ছে জনতার স্রোত। সোমবারের পরে মঙ্গলবারও একই ছবি দেখা গেল দুই জেলায়, যা দেখে উদ্বেগ চেপে রাখতে পারেননি অনেকেই।

বাঁকুড়ার মিথিলা এলাকার একটি আবাসনের বাসিন্দা মৌসুমি নন্দী বলেন, “লকডাউন-এ কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে লকডাউন উঠে গিয়েছে। গত দু'দিন যে ছবিটা উঠে এসেছে, তাতে আমরা উদ্বিগ্ন। এত মানুষ এক সঙ্গে বাইরে বেরলে সংক্রমণের সম্ভাবনা প্রবল। প্রশাসনের উচিত সকলকে সচেতন করা।”

Advertisement

পুরুলিয়া শহরে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে এ দিন পুলিশকে মাইক হাতে পথে নামতে হয়েছিল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং পারস্পরিক দুরত্ব বজায় রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়। পুলিশের দাবি, তাতে রাস্তাঘাট অনেকটা ফাঁকা হয়।

এ দিন সকাল থেকে পুরুলিয়া শহরের বিভিন্ন রাস্তায় থিকথিকে ভিড় নজরে আসে। খোলা ছিল প্রায় সব দোকান। মিষ্টির দোকান খোলার কথা বেলা ১০টায়। কিন্তু এ দিন তার অনেক আগেই শহরের একাধিক বাজারে মিষ্টির দোকানগুলি খুলে যায়। পোস্ট অফিস মোড়, ট্যাক্সি স্ট্যান্ড, মেন রোড, চকবাজার, মধ্যবাজার, বিটি সরকার রোড-সহ অনেক এলাকায় বহু মানুষকে রাস্তায় দেখা যায়।

এই ছবি দেখে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের আক্ষেপ, “রাস্তাঘাটে, বাজারে কোথাও লকডাউন মানা হচ্ছে না। কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে ঠিকই, তবে এ-ও বলা হয়েছে যে, বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাড়ি থেকে বার হবেন না।”

জেলাশাসক রাহুল মজুমদারও বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে পুলিশ রাত-দিন পথে নেমে কাজ করছে। মানুষজনকেও আমরা সতর্ক করছি। বারবার বলা হচ্ছে নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে চলুন। খুব প্রয়োজন পড়লে রাস্তায় বেরোন। তাতেই সবার মঙ্গল।’’

বাঁকুড়ার চিত্রটাও ছিল মোটের উপরে একই। সকাল হতেই বাঁকুড়া শহরের বেশিরভাগ দোকান খুলে যায়। কিছু জায়গায় চায়ের দোকান এবং সেলুনও খোলা ছিল। শহরের রানিগঞ্জ মোড়, মাচানতলা, পেট্রোল পাম্প মোড়, কলেজ রোডে ব্যাপক ভিড় ছিল। যানবাহনের চাপও ছিল যথেষ্ট। ফলে কয়েকটি জায়গায় যানজট তৈরি হয়।

রানিগঞ্জ মোড় সংলগ্ন এলাকার এক চায়ের দোকানের মালিক বলেন, “দোকান খোলার পরে থেকেই লোকজন ভিড় করছে। পারস্পরিক দুরত্ব বজায় রাখতে বলছি। কিন্তু তাঁদের বেশির ভাগই কথা শুনছেন না।” শহরের বিভিন্ন জায়গায় নির্দিষ্ট সময়ের আগেই এ দিন খুলে গিয়েছিল মিষ্টির দোকান। বাজার এলাকাগুলিতে পুলিশকে টহল দিতে দেখা গিয়েছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “বাজারের পরিস্থিতির উপরে আমাদের নজর রয়েছে। কোথাও জটলা দেখলে পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে।” যদিও বাস্তব চিত্র বলছে, পুলিশের টহলদারির পরেও পথে ভিড় কমেনি।

‘লকডাউন’-এ কোন দোকান খোলা যাবে, তা নিয়ে পুরুলিয়া শহরের ব্যবসায়ীদের একাংশের মধ্যে ধন্দ তৈরি হয়েছে। পুরুলিয়া পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর বিভাসরঞ্জন দাস বলেন, “দোকান খুলতে পারবেন কি না, তা জানতে অনেকেই যোগাযোগ করছেন। আমাদের কাছে এ নিয়ে স্পষ্ট কোনও নির্দেশ নেই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement