এপ্রিল সদ্য চৌকাঠ ডিঙিয়েছে। এ দিকে পারদ ৪১ ডিগ্রি ছুঁয়ে তরতর করে আরও এগোনোর জন্য কোমর বাঁধছে।
দিন তিনেক ধরে তাপমাত্রার যা বহর, তার চোটে প্রাণান্তকর অবস্থা আপামর জেলাবাসীর। বাড়ির ভিতরে ফ্যান চললে কষ্ট কিছুটা কম। কিন্তু বাইরে গেলেই দাবদাহে মাথা ঘুরে যাওয়ার জোগাড়। সঙ্গে নাকমুখ জ্বালা করিয়ে দেওয়ার মত গরম হাওয়া। চট করে যে পারদ নেমে স্বস্তি আসবে, আবহাওয়া দফতর তেমন কোনও ইঙ্গিত দিতে পারছে না। আশার কথা একটাই, এখনও পর্যন্ত আপেক্ষিক আর্দ্রতা সীমা ছাড়ায়নি।
দিন কয়েক আগেও সকালে যেখানে ঝিরঝিরি ঠান্ডা হওয়া বইছিল। কিন্তু সেই বসন্তের আবহাওয়া বেমালুম গায়েব। বুধবার থেকে রোজ পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রোদের তেজ। সকাল ৮টা বাজতে না বাজতেই সূর্যের চোখ রাঙানি শুরু। সকাল ১০টার পর থেকে গরম অসহ্য হতে শুরু করছে। বিকাল ৪টের আগে পর্যন্ত চলছে একই পরিস্থিতি।
গরমের প্রভাব পড়েছে জনজীবনেও। বেলা ১১টার পর থেকেই জেলার বাজারহাট, পথঘাট প্রায় ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। নিতান্ত প্রয়োজন না হলে কেউই বাড়ির বাইরে বেরোতে চাইছেন না। জেলার কিছু মাঠে বোরো ধান রয়েছে। ঠায় মাঠে কাজ করতে খুবই সমস্যায় পড়ছেন চাষিরা। অধিকাংশ স্কুলই সকাল থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে। তবে ব্যস্ততা বেড়ছে মাটির কলসির কারিগরদের। ব্যস্ততা বেড়েছে আইসক্রিম আর সরবত বিক্রেতাদের।
অতিরিক্ত তাপে ডিহাইড্রেশন, পেশিতে টান বা ব্যাথা, জ্বর, বমি, ডায়েরিয়া দেখা দিতে পারে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। দিচ্ছেও তাই। তবে পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ির।
চিকিৎসকেরা এই পরিস্থিতিতে একটানা রোদে কাজ না করার পরামর্শ দিচ্ছেন। জীবিকার টানে যাঁদের বাড়ির বাইরে যেতেই হয়, তাঁদের সরাসরি রোদ এড়িয়ে চালার পরমর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। রোদে গেলেও শরীর ঢাকা সুতির পোশাক, ছাতা, রোদ চশমা ব্যবহার করা দরকার। পাতে থাকবে সহজপাচ্য হালকা খাবার। আর বাইরে যেখানে সেখানে ঠান্ডা পানীয়, সরবত, কাটা ফল একদম নয়। এই সময় বাড়ি থেকে বেরনোর সময় সঙ্গে বেশি করে জল বোতলে ভরে নেওয়া দরকার বলে জানাচ্ছেন অধিকাংশ চিকিৎসকই।