পরিষেবা ফিরলেও থাকছে নানা প্রশ্ন

বুধবার বিকেল থেকে রবিবার বিকেল—টানা পাঁচ দিন মুখ থুব়ড়ে পড়েছিল পুরুলিয়ার বিভিন্ন এলাকার বিএসএনএল নেটওয়ার্ক। রবিবার সকাল ১০টা থেকে ঘণ্টা খানেক থেকে আবার গ্রাহকদের মোবাইল থেকে টাওয়ার বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিল। সন্ধ্যার পরে তা থিতু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৭ ০১:৫৬
Share:

রবিবার সন্ধ্যায় পরিষেবা সচল হয়েছে বলে বিএসএনএল-এর দাবি। অবশেষে। পাঁচ দিন পরে। তবে সোমবা রও জেলার বেশ কিছু এলাকার গ্রাহকেরা নেটওয়ার্ক পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। অনেক এলাকাতেই সিগনাল এত দুর্বল, যে খোলা জায়গায় না এলে ফোন করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ।

Advertisement

বুধবার বিকেল থেকে রবিবার বিকেল—টানা পাঁচ দিন মুখ থুব়ড়ে পড়েছিল পুরুলিয়ার বিভিন্ন এলাকার বিএসএনএল নেটওয়ার্ক। রবিবার সকাল ১০টা থেকে ঘণ্টা খানেক থেকে আবার গ্রাহকদের মোবাইল থেকে টাওয়ার বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিল। সন্ধ্যার পরে তা থিতু হয়েছে। তবে রঘুনাথপুর ও মানবাজার মহকুমার বিএসএনএল পরিষেবা সচল করতে গিয়ে পাঁচ দিন কাবার হয়ে গিয়ছে। আর এই ঘটনায় বেআব্রু হয়ে পড়েছে জেলার সরকারি যোগাযোগ ব্যবস্থার দশা।

কী ভাবে কাজ করে বিএসএনএল-এর নেটওয়ার্ক?

Advertisement

সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, মাটির নীচ দিয়ে জেলা টেলিকমের নিজস্ব কেবল গিয়েছে। তা দিয়েই যোগাযোগ গড়ে ওঠে। কিন্তু প্রায়ই ওই কেব্‌ল কাটা পড়ে। তখন ভরসা ইটিআর-এর (ইস্টার্ন টেলিকম রিজিয়ন) কেব্‌ল।

ইটিআর-এর কেব্‌ল ব্যাপারটা কী?

ইস্টার্ন টেলিকম রিজিয়ন বিএসএনএল-এর পূর্ব ভারতের বিভিন্ন মেন এক্সচেঞ্জের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে। যেমন, পুরুলিয়া জেলার মূল এক্সচেঞ্জ পুরুলিয়া শহরের রাঘবপুর এলাকায়। ইটিআর সেখানে মূল সংযোগ দেয়। রাঘবপুর থেকে জেলার চারটি জোন— রঘুনাথপুর, মানবাজার, পুরুলিয়া এবং ঝালদার এক্সচেঞ্জে কেব্‌ল পাতা রয়েছে। সেই কে‌ব্‌ল জেলা টেলিকমের।

বিএসএনএল সূত্রের খবর, বুধবার ইটিআর রানিগঞ্জ থেকে একটি নতুন লাইন মূল লাইনের সঙ্গে জুড়ছিল। সেই সময়েই ইটিআর-এর মূল লাইন কেটে যায়। এর ফলেই মানবাজার ও রঘুনাথপুরের পরিষেবা বসে যায়। কিন্তু পুরুলিয়া এবং ঝালদায় সংযোগ ঠিক থাকলেও বেছে বেছে ওই দু’টি মহকুমার সংযোগই বিপর্যস্ত হল কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে দীর্ঘদিনের একটি সমস্যার কথা উঠে এসেছে।

জেলা টেলিকমের এক কর্তা জানান, আসলে মানবাজার ও রঘুনাথপুরের লাইন দীর্ঘ দিন আগেই বসে গিয়েছে। মূলত কাজ চলছে ইটিআর-এর বিকল্প লাইনের উপরে ভরসা করে। ফলে ইটিআর-এর তার কাটায় জেলা টেলিকমের তার না থাকাটার ব্যাপারটাই প্রকট হয়েছে।

জেলা টেলিকমের একটি লাইন বলরামপুর দিয়ে গিয়েছে। সেই লাইনও দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। শুক্রবার সেটি মেরামত করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু অনেক চেষ্টাতেও লাভ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ইটিআর-এর পদস্থ কর্তা দীপঙ্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলার কোথাও পরিষেবা বসে গেলে ইটিআর-এর লাইন কাটার কথা বলা হয়। কিন্তু অনেক এলাকাতেই পরিষেবা দেওয়ার দায় সরাসরি ইটিআর-এর নয়। জেলা টেলিকমের লাইন ঠিক থাকলে এই সমস্যা হত না।’’

জেলার নিজস্ব রুটগুলি কেন বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে তার কোনও উত্তর মেলেনি দফতরের কর্তাদের কাছে। জেলা টেলিকম আধিকারিক টিটি থমাস ছুটিতে রয়েছেন। খড়্গপুর সার্কলের জেলারেল ম্যানেজার মীরা মাডির ফোন বেজে গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement