প্রতীকী ছবি
প্রাতিষ্ঠানিক ‘কোয়রান্টিন’-এর মেয়াদ শেষ করে অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন বাড়িতে। তবে, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো নিয়ে উঠে আসছে নানা অভিযোগ। মূল অভিযোগ, খাবার নিয়ে। তবে তাঁদের কাছে এখনও এই সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ আসেনি বলেই দাবি করছেন দুই জেলার প্রশাসনের কর্তারা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়া জেলায় ৭৫৭টি প্রাতিষ্ঠানিক ‘কোয়রান্টিন’ রয়েছে। তাতে থেকেছেন ৩,৮৪৯ জন। তবে এখন ওই কেন্দ্রগুলিতে ভিড় অনেকটাই কমে গিয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, বান্দোয়ান, বরাবাজার ও মানবাজার ২ ব্লকের প্রাতিষ্ঠানিক ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্রগুলিতে বর্তমানে কেউ নেই। পুরুলিয়া ২, রঘুনাথপুর ১ ও জয়পুর ব্লকের প্রাতিষ্ঠানিক ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্রগুলিতেও হাতে গোনা কয়েক জন আছেন। আড়শার ৪৫টি ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্রে এখন রয়েছেন মেরেকেটে তিনশো পরিযায়ী শ্রমিক। বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন শুধু জানিয়েছে, ২২টি ব্লকের প্রতিটিতেই প্রাতিষ্ঠানিক ‘কোয়রান্টিন’ রয়েছে। তবে সেখানে এখন কতজন রয়েছেন, সেই ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি।
এ দিকে, ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্রগুলির ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরে এ নিয়ে স্মারকলিপিও দিয়েছে এসইউসি। দলের জেলা কমিটির সদস্য স্বপন নাগ বলেন, “সর্বত্র না হলেও কয়েকটি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিন সেন্টারে জলের সমস্যা রয়েছে। সাফাইয়ের কাজও হচ্ছে না বলে অভিযোগ পাচ্ছি আমরা।” পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি উত্তম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিক্ষোভ হয়তো হয়নি। কিন্তু আমরা খবর নিয়েছি, কোনও কেন্দ্রে শৌচাগার নোংরা তো কোথাও খাবার দেওয়া হয়নি।’’
পুরুলিয়ার জয়পুরের একটি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিনে থাকা এক পরিযায়ী শ্রমিকের কথায়, ‘‘প্রথমে দুপুরের খাবারে পেট ভরত না। তবে বলার পরে এখন ঠিকঠাকই দেওয়া হয়। কিন্তু রাতে প্রচণ্ড মশার উপদ্রব।’’ কাশীপুরের একটি প্রতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিনে থাকা এক পরিযায়ী শ্রমিকের সাত দিনের মেয়াদ শেষ হয়েছে শনিবার। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথমে জলখাবার দেওয়া হচ্ছিল। দিনের বাকি খাবার বাড়ি থেকে ব্যবস্থা করতে হচ্ছিল। শেষ দিনে ডাল, ভাত, তরকারি মাছ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শৌচাগারের অবস্থা ভাল নয়। এক সপ্তাহের ব্যাপার, কোনও রকমে কেটে যাবে বলে কেউ প্রতিবাদ করেনি।’’ সোনামুখী কলেজে রয়েছেন সদ্য কলকাতা থেকে ফেরা এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘‘খাবার বাড়ি থেকে আনাতে হচ্ছে। এ ছাড়া তেমন কোনও সমস্যা নেই।’’
বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ জানিয়েছেন, সাধারণত কলেজ বা সরকারি ভবনে ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্রগুলি হয়েছে। তাঁদের দাবি, জল বা পরিকাঠামোগত সমস্যা তেমন নেই। পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘প্রতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিন কেন্দ্রগুলি ঠিকঠাকই চলছে। এই মুহূর্তে কেন্দ্রগুলিতে আবাসিক কম। তাঁরা নিজেরাই রান্না করছেন। প্রশাসন চাল পৌঁছে দিচ্ছে।’’ পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিনে যেখানে যা সমস্যার খবর মিলেছে, দ্রুত সমাধানেরও চেষ্টা করা হয়েছে।’’