বোলপুরে রাস্তার ধারে বিক্রি হচ্ছে মাস্ক। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
কোনওটিতে আঁকা জোড়া ফুল, কোনওটিতে আঁকা পদ্ম। এমন ফুলই ‘ফুটেছে’ মাস্কে। করোনা-সংক্রমণ ঠেকানোর এই অন্যতম অস্ত্রে ভর করে এ ভাবেই চলছে রাজনৈতিক প্রচারও।
বোলপুর বাজারে গেলে নানা দোকানে দেখা মিলছে তৃণমূল ও বিজেপির প্রতীক আঁকা এমন মাস্কের। প্রথম দিকে নানা রঙের, নানা কায়দার মাস্ক বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছিল। তার পরে দোকানে দেখা মিলছে যুযুধান দুই দলের প্রতীক চিহ্ন আঁকা মাস্কের। মাস্ক বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, প্রথম দিকের তুলনায় এখন রাজনৈতিক প্রতীক আঁকা মাস্কের চাহিদা অনেকটাই বেড়েছে। সেই চাহিদার কথা মাথায় রেখেই তাঁরা রাজনৈতিক প্রতীক আঁকা মাস্ক বেশি করে রাখছেন।
করোনা পরিস্থিতির কারণে রাজনৈতিক জমায়েত আপাতত বন্ধ। অন্যদিকে মাস্ক পরাও বাধ্যতামূলক করেছে রাজ্য সরকার। তাই মাস্কই হয়ে উঠেছে জনসংযোগের হাতিয়ার। বাজারে নানা রংয়ের মাস্কের ঢল নামতেই বেশ কিছু ক্রেতা রাজনৈতিক দলের প্রতীক আঁকা কোনও মাস্ক আছে কি না তার
খোঁজ করতে থাকেন। এরপরই বেশকিছু মাস্ক বিক্রেতা ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করার জন্য নিজেরাই তৃণমূল ও বিজেপি দুই দলের মাস্ক তৈরি করে বিক্রি শুরু করেন। বোলপুরের মাস্ক ব্যবসায়ী অরুণ পাল ,তরুণ পালদের কথায়, ‘‘ক্রেতাদের চাহিদার কথা ভেবে ও ভাল লাভের আশায় বাড়ি থেকেই কাপড় দিয়ে দর্জির কাছে কিছু পরিমাণে দুই রাজনৈতিক দলের প্রতীক আঁকা মাস্ক তৈরি করাই। এতে ভালই সাড়া পাওয়া গিয়েছে। সাধারণ মানুষের থেকে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাই এই সমস্ত মাস্ক এখন বেশি কিনছেন।’’
বোলপুর চৌরাস্তা থেকে শুরু করে শান্তিনিকেতন রাস্তার উপর ফুটপাতে এমন মাস্ক বিক্রি করছেন মাস্ক ব্যবসায়ীরা। এক একটি মাস্কের দাম রাখা হয়েছে ৩৫ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। রাজনৈতিক প্রচারের জন্য কোনও কর্মসূচিতে গেলে বা স্বাভাবিক গতিবিধির ক্ষেত্রেও দলীয় কর্মীরা এখন আপন আপন দলের চিহ্ন আঁকা মাস্ক বেছে নিচ্ছেন।
রাজনৈতিক নেতারাও ব্যবসায়ীদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন। তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘যখন ভোট আসে তখন মিষ্টি ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতীক আঁকা মিষ্টি তৈরি করে থাকেন ভাল ব্যবসা হবে বলে। একইভাবে এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক দলের প্রতীক আঁকা মাস্কও তৈরি করে বিক্রি করছেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘তবে সব ক্ষেত্রেই চাহিদা বেশি রয়েছে জোড়া ফুলেরই।’’
আগামী দিনে কি ভোট প্রচারের কৌশলও হতে পারে এই মাস্ক? বিজেপি জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, ‘‘মাস্ক ভোট প্রচারের কৌশল হবে কি না জানি না। তবে এটা ব্যবসাদারদের বিক্রির একটা কৌশল। ভারতীয় জনতা পার্টির প্রতীক ছাপিয়ে যে সমস্ত ব্যবসাদার মাস্ক বিক্রি করছেন তাঁদেরকে ধন্যবাদ জানাই।’’
তবে মাস্কের বাজারে কেবল দুই ফুলেরই দেখা মিলছে। তেমন দেখা নেই বাম-কংগ্রেসের। ব্যবসায়ীদের দাবি, কংগ্রেস ও সিপিআইএমের প্রতীক আঁকা মাস্কের চাহিদা তেমন নেই। তাই মাস্কে দুই ফুলেরই রমরমা। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সঞ্জয় অধিকারীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ব্যবসাদাররা ব্যবসা করার জন্য এটা করছে। আমাদের দল মানুষের পাশে সব সময়ের জন্য আছে।’’