—প্রতীকী চিত্র।
স্বামী খুনের অভিযোগে ধৃত বিচারাধীন বন্দিই এখন পুরুলিয়া জেলা সংশোধনাগারের মহিলা সেলের অন্য বন্দিদের আইনি পরিষেবা দিচ্ছেন। ৯ নভেম্বর কলকাতায় সার্কিট হাউসের প্রেক্ষাগৃহে জাতীয় আইনি পরিষেবা দিবসে ‘সেরা প্যারা লিগাল ভলান্টিয়ার’-এর পুরস্কার পেয়েছেন সেই পাপড়ি বিশ্বাস চট্টরাজ।
২০২০-র ১৭ জানুয়ারি রাতে পুরুলিয়া শহরের রাঘবপুর মোড়ে নিজের বাড়িতে খুন হন অধ্যাপক অরূপ চট্টরাজ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, খুনের তদন্তে নিহতের স্ত্রী পাপড়ির ভাবলেশহীন চোখমুখ দেখেই সন্দেহ হয় তদন্তকারীদের। পুলিশের দাবি, মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তারা জানতে পারে, প্রাক্তন প্রেমিকের সঙ্গে যোগসাজশ করে স্বামীকে খুন করেন পাপড়ি। খুনের সাত দিনের মাথায় ঘটনার কিনারা করার দাবি
করে পুলিশ।
গ্রেফতার করা হয় অপর অভিযুক্ত অজয় অম্বানীকে। মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা অজয় পুরুলিয়া শহরের রাঁচী রোডে একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। বছর তিন ধরে পুরুলিয়া জেলা সংশোধনাগারের মহিলা সেলে জনা কুড়ি আবাসিকের সঙ্গে রয়েছেন পারড়ি।
সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, পাপড়ি একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন।এখন তিনি মহিলা সেলের বন্দিদের নানা কাজের জন্য আবেদনপত্র লিখে দেন। পাশাপাশি তিনি জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ মনোনীত প্যারা লিগাল ভলান্টিয়ার। এই কাজের জন্য পারিশ্রমিক পান। আইনি পরিষেবা পেতে, উকিল চেয়ে এবং বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত করার আর্জি জানাতে বন্দিদের তরফে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনপত্র লেখার কাজ করেন পাপড়ি। এ ছাড়াও, বন্দিরা কী আইনি পরিষেবা পেতে পারেন, তা-ও তাঁদের বুঝিয়ে দেন।
পুরুলিয়া জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব দেবাশীষ সাঁতরা বলেন, ‘‘সংশোধনাগারের বন্দিরা আইনি পরিষেবা পেয়ে থাকেন। তাঁদের আবার প্রশিক্ষণ দিয়ে আইনি পার্শ্ব স্বেচ্ছাসেবক (প্যারা লিগাল ভলান্টিয়ার) হিসাবে নিযুক্ত করা হয়। নবাগত বন্দিরা কী ধরনের আইনি পরিষেবা পেতে পারেন, তা জানতে তাঁদের সাহায্য করেন ওই স্বেচ্ছাসেবকেরা। সম্প্রতি রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ পুরুলিয়া জেলা সংশোধনাগারের এক বন্দিকে সেরা আইনি পার্শ্ব স্বেচ্ছাসেবকের
পুরস্কার দেন।’’