khayrasole

নেতার বিরুদ্ধে পোস্ট, পঞ্চায়েত সদস্য ধৃত

খয়রাশোলের ব্লক তৃণমূলের দ্বন্দ্ব মেটাতে মঙ্গলবারই সিউড়িতে জেলা কার্যালয়ে ডাকা হয়েছিল বিবদমান দু’পক্ষকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খয়রাশোল শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২৩ ০৮:৪১
Share:

আদালত চত্বরে রাজীব পান। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

গ্রেফতার হলেন খয়রাশোলের তৃণমূল ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে সমাজমাধ্যমে ‘আপত্তিকর’ পোস্ট করায় অভিযুক্ত গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য রাজীব পান। খয়রাশোলের কেন্দ্রগড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই সদস্যকে বুধবার রাতে খয়রাশোল থানা এলাকা থেকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনায় শাসক দলের অন্দরে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শৃঙ্খলাভঙ্গ করলে ও দলে অস্থিরতা সৃষ্টি করলে শাস্তি পেতে হবে।’’

Advertisement

ধৃতকে হেফাজতে চেয়ে বৃহস্পতিবার দুবরাজপুর আদালতে তুলেছিল পুলিশ। বিচারক ধৃতের তিন দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছেন বলে জানান, সরকারি আইনজীবী রাজেন্দ্রপ্রসাদ দে। ইচ্ছাকৃত ভাবে কারও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা, জনমানসে সম্মানহানি, শান্তি বিঘ্নিত করার মতো ধারা দেওয়া হয়েছে বলে জানান রাজেন্দ্রপ্রসাদ।

খয়রাশোলের ব্লক তৃণমূলের দ্বন্দ্ব মেটাতে মঙ্গলবারই সিউড়িতে জেলা কার্যালয়ে ডাকা হয়েছিল বিবদমান দু’পক্ষকে। তার আগের দিন, সোমবার ব্লক সভাপতি আক্রমণ করে দলেরই ‘বিরোধী গোষ্ঠী’র বলে পরিচিত ওই গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সমাজমাধ্যমে একাধিক ‘আপত্তিকর’ পোস্ট করেন বলে অভিযোগ উঠে। পোস্টে ব্লক সভাপতির স্ত্রী ও অন্য নেতাদের বিরুদ্ধেও কুরুচিকর মন্তব্য ছিল।

Advertisement

ব্লক সভাপতিকে ‘ব্যক্তিগত আক্রমণের’ পাশাপাশি যে পোস্ট ঘিরে এলাকায় চর্চা শুরু হয়, তাতে লেখা ছিল— ‘সুদীপ্ত ঘোষ (ছোড়দা) জিন্দাবাদ। তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ। রাজনীতির অবৈধ কারবারি কাঞ্চন অধিকারী মুর্দাবাদ’। দলের অন্দরে কান পাতলেই শোনা যায়, খয়রাশোলের রাজনীতিতে মূল বিবাদ কাঞ্চন ও কোর কমিটির সদস্য সুদীপ্তের মধ্যে সংঘাতকে কেন্দ্র করেই। ব্লক সভাপতি না ব্লকের প্রাক্তন পর্যবেক্ষক সুদীপ্ত— কার ‘নিয়ন্ত্রণে’ থাকবে খয়রাশোল ব্লক, এই প্রশ্নে কার্যত দু’ভাগ তৃণমূলের স্থানীয় সংগঠন। সুদীপ্তের ‘অনুগামী’ বলে পরিচিত পঞ্চায়েত সদস্য রাজীবের বিতর্কিত একাধিক পোস্ট দুই শিবিরের মধ্যে দ্বন্দ্ব কয়েকগুণ উস্কে দেয় বলে দলের অন্দরের খবর।

সোমবার রাতেই খয়রাশোলের কেন্দ্রগড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই সদস্যের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে পুলিশে লিখিত অভিযোগ করেন কাঞ্চন অধিকারী। পরদিন বিকেলে সিউড়ির বৈঠকে না গিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার ও ঘটনার নেপথ্য কে বা কারা খুঁজে বের দাবিতে পুলিশকে স্মারকলিপি দেওয়া হয় শাসক দলের পক্ষ থেকে। অভিযুক্তের খোঁজে জোর তল্লাশি শুরু হয়েছিল। ঘটনার তিন দিনের মাথায় ধরে পড়েন রাজীব।

এ দিন আদালত চত্বরে বৃহস্পতিবার রাজীব দাবি করেন, কাঞ্চন অধিকারী তাঁর রাজনৈতিক গুরু। তিনি বলেন, ‘‘নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। সংবাদমাধ্যমকে সেটা দেখতে হবে না।’’ ব্লক সভাপতি কাঞ্চন অধিকারী অবশ্য বলেন, ‘‘আমি দ্রোণাচার্য নই, রাজীব একলব্যও নয়। ও দুষ্কৃতী। উপযুক্ত শাস্তি চাই।’’

তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দলে আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে কোনও আপস করা হবে না। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। দলগতভাবেও বিষয়টি দেখা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement