থমকে সভা। পুরুলিয়া ১ ব্লকের চাকলতোড়ে। নিজস্ব চিত্র
হিসেব নিয়ে গোলমালের জেরে বানচাল হয়ে গেল গ্রাম সংসদের বৈঠক। সোমবার বিকেলে চাকলতোড় গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি সংসদের সভা ছিল। হাজির ছিলেন তৃণমূল পরিচালিত ওই পঞ্চায়েতের প্রধান শিবু ধীবর। কিন্তু হিসেবের প্রসঙ্গ উঠতেই গোলমাল শুরু হয় সভায়।
স্থানীয় বাসিন্দা তথা বিজেপির পুরুলিয়া ১ মণ্ডলের সহ সভাপতি বিকাশ রেওয়ানির দাবি, সভা উপলক্ষ্যে পঞ্চায়েত একটি প্রচারপত্র বিলি করেছিল। তাতে গত ছয় মাসের হিসেব দেওয়া হবে বলে উল্লেখ ছিল সেখানে। কিন্তু হিসেবের প্রসঙ্গ আসতেই প্রধান চুপ করে বসে থাকেন বলে অভিযোগ ওই বিজেপি নেতার। তাঁর দাবি, ‘‘কোন খাতে কত টাকা পেয়েছেন এবং কত টাকা খরচ করেছেন, প্রধানকে তার হিসেব দিতে বলেন সভায় হাজির এলাকাবাসী। কিন্তু প্রধান নীরব থাকায় সমস্যা তৈরি হয়।’’
এ দিকে প্রধানের দাবি, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরে পঞ্চায়েতের নিজস্ব কাজ বলতে তেমন কিছু হয়নি। তবে ব্লক থেকে যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে সেগুলি বাস্তবায়িত হয়েছে। যেহেতু পঞ্চায়েতের নিজস্ব কোনও কাজ তেমন হয়নি, তাই তার হিসেব তাঁর জানা নেই।
হিসেব দেওয়া নিয়ে চাপানউতোরের মাঝেই সভা বানচাল হয়ে যায়। গোলমালের খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছয়। তবে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। প্রধান বলেন, ‘‘সোমবার বিকেলের সভা হয়নি। অন্য একদিন সভা হবে।’’ বিডিও পুরুলিয়া (১) দিব্যজ্যোতি দাসের মন্তব্য, ‘‘সোমবার সভা না হওয়ায় অন্য কোনও দিন সভা করতে বলা হয়েছে।’’
মঙ্গলবার পঞ্চায়েতের বিরোধী কয়েক জন সদস্য হেসেব সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত ও হস্তক্ষেপ চেয়ে বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিডিওর বক্তব্য, ‘‘একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। আসলে পঞ্চায়েতে যিনি হিসেবের বিষয়টি দেখভাল করেন, তিনি একটি প্রশিক্ষণে যোগ দিতে বাইরে গিয়েছেন। সেই কারনে প্রধান উত্তর দিতে পারেননি।’’
বিজেপির অভিযোগ, পাড়া বৈঠক করা হয়নি। যদিও নথিতে সেই বৈঠক হয়েছে বলে উক্কেখ রয়েছে। এই বিষয়টিও বিডিও-কে জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিডিও-র বক্তব্য, ‘‘পাড়া বৈঠকের পরিকল্পনা নিয়ে একটি অভিযোগ রয়েছে। আমরা বলেছি সকলকে নিয়েই পাড়া বৈঠক করতে হবে। কারণ পরিকল্পনা নেওয়া হয় বাসিন্দাদের স্বার্থেই।’’ আর প্রধানের বক্তব্য, ‘‘পাড়া বৈঠক নিয়ে লোকজন অভিযোগ তুলছিলেন। আমরা সকলকে নিয়েই কাজে বিশ্বাস করি। তাই সংসদ সভায় সকলেই উপস্থিত ছিলেন।’’