প্রতীকী ছবি।
লক্ষ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন। বুথ ছুঁয়ে পদযাত্রা বা গ্রাম জাগাও কর্মসূচির পরে এ বার বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিবিড় জনসংযোগে জোর দিতে চাইছে সিপিএম। দল সূত্রে খবর, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে যত বেশি সংখ্যক বাড়িতে পৌঁছে মানুষের সঙ্গে কথা বলতে চাইছেন সিপিএম কর্মীরা। এই এক পক্ষকালে ৪০ শতাংশ বাড়ি গিয়ে নিবিড় জনসংযোগ এবং মানুষের মনের তল পাওয়াই দলের লক্ষ্য।
সোমবার থেকে কর্মসূচি শুরু হয়ে গিয়েছে জেলার বিভিন্ন অংশে। সিপিএমের বীরভূম জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলছেন, ‘‘আমরা প্রচারে যা বলছি, সেটা সত্যি সত্যি মানুষ বলছেন কি না বা মানুষের আরও কিছু প্রশ্ন আছে কি না, দেখতে চাইছি। অনেক সময় দেখা যায়, আমরা যে বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে চাইছি, সেই বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষ বিশেষ ভাবছেন না।’’
সিপিএম নেতাদের একাংশ জানিয়েছেন, নীতিগত বিরোধিতা না-থাকলেও ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ নিয়ে অনেক সময়ই কৌতুক করা হয়েছে। কিন্তু, দেখা গিয়েছে ওই প্রকল্পকে মহিলারা অত্যন্ত ইতিবাচক ভাবে নিয়েছেন। স্রেফ ভুল ধরার জন্য ভুল না-ধরে বরং মানুষের প্রকৃত সমস্যা খুঁজে বিকল্প প্রচারের পথ খোঁজাই উদ্দেশ্য। যেমন আবাস যোজনায় প্রকৃত উপভোক্তাদের বঞ্চিত করে সম্পন্নদের অনেকে বাড়ি পাচ্ছেন, এই অভিযোগের পাশাপাশি এলাকার মানুষের হাতে কাজ না-থাকা এবং দুর্নীতি ও কাটমানি-সহ নানা অভিযোগ উঠে আসছে।
ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করে একের পর এক কর্মসূচি নিচ্ছে সিপিএম। গত নভেম্বরে প্রতিটি বুথ ছুঁয়ে পদযাত্রা বা গ্রাম জাগাও কর্মসূচি নিয়েছিল সিপিএম। দলের দাবি, ‘সফল’ সেই কর্মসূচির পর মানুষের মন বুঝতে এ বার বাড়ি বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত। প্রতিটি বুথ ধরে ধরে কর্মসূচি ঠিক করা হয়েছে। দিনে কম পক্ষে প্রতি বুথের ৩০ থেকে ৫০টি বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। জেলার এক সিপিএম নেতার কথায়, ‘‘হয়তো সব ক্ষেত্রে এতগুলো বাড়িতে যাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু, এলাকায় পৌঁছে মানুষের সঙ্গে কথা বলা ও তাঁদের সুবিধা-অসুবিধার কথা জানা যাচ্ছে।’’
সিপিএমের এই কর্মসূচিকে অবশ্য বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসকদল তৃণমূল এবং প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সংগঠন ধরে রাখতে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের লক্ষ্যই হল নিবিড় জনসংযোগ। তবে, এটা করে সিপিএমের লাভ কিছু হবে না। কারণ, ৩৪ বছরের বাম শাসনে কী পেয়েছেন, সেটা মানুষ ভুলে যাননি।’’
দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহার বক্তব্য, ‘‘কর্মসূচি নিয়ে এখন বামেরা মানুষের সঙ্গে যুক্ত হতে চাইতেই পারেন। কিন্তু, পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে মানুষই বামেদের সঙ্গে যুক্ত হতে চাইবেন না। এখন রাজ্যে তৃণমূলের বিকল্প একমাত্র বিজেপি।’’