মনোনয়ন তুলতে সোনামুখী পুরসভার অনেক প্রার্থীই সোমবার বিষ্ণুপুর মহকুমাশাসকের অফিসে এসেছিলেন। কিন্তু বিষ্ণুপুর পুরসভার প্রার্থীদের তেমন ভিড় দেখা গেল না। নজর রাখছে ক্যামেরা। —নিজস্ব চিত্র।
মনোনয়নপত্র দাখিলের আর মাত্র দু’টি দিন বাকি। শাসকদল তৃণমূল বিষ্ণুপুরের ১৯টি ওয়ার্ডের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে পারলেও বিরোধী দল বামফ্রন্ট ও বিজেপি সোমবার পর্যন্ত তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকাই তৈরি করতে পারেনি। ফলে পুরভোটে শাসকদলকে বিরোধীরা আদৌ প্রার্থী দিয়ে চাপে রাখতে পারবে না সংশয় তৈরি হয়েছে ভোটারদের মনে।
এমনিতেই গত চার বার জেলা কংগ্রেস সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই পুরসভার ক্ষমতা দখল করেছিল কংগ্রেস। গতবার তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে পান জেলা সভাপতির পদ। তাঁরই নেতৃত্বে পঞ্চমবারের জন্য দলকে জিতিয়ে তিনিই হয়েছিলেন পাঁচবারের পুরপ্রধান। পরে বিধায়ক হয়ে বর্তমানে রাজ্য সরকারের মন্ত্রীও তিনি। এ বারও তাঁরই নেতৃত্বে নির্বাচনে লড়ছে তৃণমূল। রবিবার তৃণমূল বিষ্ণুপুর শহরের সম্পূর্ণ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। শ্যামবাবুর নিজের ওয়ার্ড ১১ নম্বর মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় ওই আসনে ভাতৃবধূ গোপা মুখোপাধ্যায়কে দাঁড় করিয়ে নিজে দাঁড়াচ্ছেন ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে। তাঁরই সঙ্গে থাকা পাঁচবারের উপ পুরপ্রধান বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায় এ বারও লড়ছেন নিজের ৯ নম্বর ওয়ার্ডেই। তবে প্রার্থী তালিকায় তৃণমূলে নতুন মুখের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো।
গতবার ১৯ আসনের এই পুরসভায় সিপিএম জিতেছিল মাত্র ৩টি আসনে। দলের বিষ্ণুপুর জোনাল সম্পাদক অনিল পণ্ডিত বলেন, “আমরা সব আসনেই লড়ব। ৮ জন প্রার্থীর নাম আগে ঘোষণা করা হয়েছে। এ দিন আরও ছ’জনের নাম জানানো হয়েছে। বাকি নামগুলি শীঘ্রই জানাব।” কংগ্রেস গতবার ১০টি আসনে লড়লেও একটিতেও জিততে পারেনি। ওই দলের বিষ্ণুপুর শহর কংগ্রেস সভাপতি উদয় চক্রবর্তী বলেন, “এ বার ১৯টি ওয়ার্ডেই প্রার্থী দেব আমরা।” কিন্তু এখনও কোনও তালিকাই তৈরি করতে পারেননি তাঁরা। একই অবস্থা বিজেপির-ও। গতবার তিনটি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েও একটিতেও জিততে পারেনি বিজেপি। দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্বপন ঘোষ এ দিন বলেন, “মোদী হাওয়ায় আমরা ভাসছি। এ বার সব আসনে লড়তে চাই। কলকাতা থেকে রাজ্য নেতৃত্ব তালিকা ঘোষণা করবে।”
প্রশ্ন উঠছে, কিন্তু হাতে মাত্র আর দু’টি দিন রয়েছে। কবে বিরোধীরা সম্পূর্ণ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে? কোনও দলই নির্দিষ্ট ভাবে দিন জানাতে পারেনি। শাসক দলের এক নেতার টিপ্পনি, “বিরোধীদের হয়ে ভোটে দাঁড়াবে কে? এখন আমাদেরই না লোক জোগাড় করে দিতে হয়।”