ফাইল চিত্র
মাধ্যমিকে বসা ছাত্রের সংখ্যা কমেছে। বেড়েছে ছাত্রীর সংখ্যা। হিসেব করলে দেখা যাচ্ছে, পুরুলিয়ায় ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে পরীক্ষার্থী বেড়েছে ২৩ জন।
পরিসংখ্যান বলছে, তারও আগের বছরের তুলনায় গত বছর পুরুলিয়ায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কমেছিল ৯৪২ জন। সেই তুলনায় এ বারের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অল্প হলেও বাড়ায় আশার আলো দেখছেন অনেকে। এ বার পুরুলিয়ায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছাত্রের সংখ্যা কমেছে ১৭০ জন। ছাত্রী বেড়েছে ১৯৩ জন। সোমবার রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘পুরুলিয়ার বেশ কয়েকটি ব্লক নারীশিক্ষায় পিছিয়ে ছিল, এটা তো অস্বীকার করা যায় না। সে নিরিখে টানা কয়েক বছর ধরেই মাধ্যমিকে ছাত্রী সংখ্যা বাড়ছে। এটা নিঃসন্দেহে খুশির খবর। এর পিছনে কন্যাশ্রী প্রকল্পের ভূমিকা অনস্বীকার্য।’’
জেলার শিক্ষক অভিভাবকদের একাংশের মতে, শহর ও ব্লক সদরগুলিতে ছাত্রীরা স্কুলের গণ্ডি পেরোলেও বেশ কিছু ব্লকের প্রত্যন্ত এলাকায় পরিকাঠামো ও নানা কারণে ছাত্রীরা প্রায়ই দৌড়ের বাইরে চলে যায়। কন্যাশ্রী প্রকল্পে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন জোর দিচ্ছে। এখানেই ছাত্রীদের মধ্যে থেকে বেছে নেওয়া হয়েছে ‘কন্যাশ্রী বড়দি’। হয়েছে কন্যাশ্রী ক্লাব। কন্যাশ্রী ভবন। এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কন্যাশ্রীদের কলম দিয়েছে জেলা প্রশাসন। পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘ছাত্রীদের সংখ্যা মাধ্যমিকে বাড়াটা অবশ্যই আনন্দের। কন্যাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা জেলার মেয়েদের পায়ের তলার মাটি আরও শক্ত করতে চাইছি। এই পরিসংখ্যান আমাদের কাছে আশাপ্রদ।’’
তবে বামপন্ঠী শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ-র জেলা সম্পাদক ব্যোমকেশ দাস বলেন, ‘‘স্কুলগুলির বেহাল পরিকাঠামোর জন্য মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যায় গত কয়েকবছর ধরে ভাটা দেখা যাচ্ছে। এ বার যদিও বেড়েছে, কিন্তু সেটা নগণ্য। স্কুলগুলিতে পরিকাঠামো নেই। শিক্ষকের অভাব। বিষয়গুলি গুরুত্ব দিয়ে না দেখলে শিক্ষার ভবিষ্যত খুব একটা উজ্জ্বল বলে আমাদের মনে হয় না। এ ভাবে চললে অন্য বোর্ডে বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রী চলে যাবে। শিক্ষা টাকা দিয়ে কেনার একটা ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে।’’
পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির পুরুলিয়া শাখার তরফে বিকাশ মাহাতো অবশ্য বলছেন, ‘‘স্কুলছুট অনেক দিনের সমস্যা। বাম আমল থেকেই রয়েছে। সেখান থেকে আমরা ছেলেমেয়েদের স্কুলমুখী করছি। একটু একটু করে ছবিটা বদলাচ্ছে।’’
পুরুলিয়ার মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালন উপদেষ্টা কমিটির আহ্বায়ক সত্যকিঙ্কর মাহাতো জানান, সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষা গ্রহণের জন্য জেলায় সমস্ত রকমের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে। রাস্তায় যাতে ট্রাফিক ঠিক থাকে, সেই বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে পুলিশকে।