হাসিমুখে। মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী।—নিজস্ব চিত্র
চলতি অর্থবর্ষে প্রথম তিন মাসে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের একাধিক উন্নয়নমূলক কাজের জেলা-ভিত্তিক অগ্রগতির প্রশংসা করলেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার মন্ত্রীর উপস্থিতিতে বীরভূম-সহ পাঁচটি জেলার প্রশাসনের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠক হয় বোলপুরে। ঘণ্টা চারেকের ওই সভায় একশো দিনের কাজের প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা এবং নির্মল গ্রাম প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে সবিস্তার আলোচনা হয়। সভা শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘সদ্য বিধানসভা ভোট মিটেছে। তার ফলে কিছুটা হলেও কাজে ঢিলেমি এসেছে। সে কথা মনে রেখেও এটা বলাই যায় যে চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে কাজে গতি এসেছে। সেটা ধরে রাখতে হবে। কোনও ঢিলেমি বরদাস্ত করা হবে না।’’
এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বীরভূম, বর্ধমান, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক, জেলা পরিষদের অতিরিক্ত জেলাশাসক, সভাধিপতি, পূর্ত ও জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ-সহ অনেকেই। বোলপুরের একটি বেসরকারি হোটেলের সভাকক্ষে ছিলেন জেলার দুই মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও চন্দ্রনাথ সিংহ, ডব্লুবিএসআরডিএ চেয়ারম্যান অনুব্রত মণ্ডল, ইউনিসেফ প্রতিনিধিরা। পাঁচ জেলার উন্নয়নের কাজ এবং দাবিদাওয়া ও তার প্রয়োজনীয়তা ‘পাওয়ার পয়েন্ট’ এর মাধ্যমে মন্ত্রীর সামনে তুলে ধরা হয়। রিভিউ বৈঠকের শুরুতে মন্ত্রী মেনে নেন, বিধানসভা নির্বাচনের জন্য পঞ্চায়েতের উন্নয়ন মূলক কাজে কিছুটা ঢিলেমি হয়েছে। তারপরেই আরও দ্রুত কাজ করে সেই ঘাটতি পূরণের নির্দেশ দেন। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘আমরা প্রতিটি দফতর এবং আধিকারিকের কথা শুনব। আপনারা যে সকল পরিকল্পনা এবং প্রস্তাব দেবেন, সেই কাজ কিন্তু আপনাদেরই করতে হবে। কাজের ক্ষেত্রে কোনও রকম সমঝোতা করা চলবে না।’’
প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় শুধু বীরভূম জেলা থেকে ২৭৪ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার ও ৩০০ কিলোমিটার নতুন রাস্তা তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে মন্ত্রীকে। একই ভাবে বর্ধমানে ৯৫০ কিমি, বাঁকুড়ায় ৮৬০ কিমি, পুরুলিয়া ৮৫০ কিমি ও মুর্শিদাবাদে ৯৮০ কিমি রাস্তা তৈরির প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে মন্ত্রীর কাছে। বীরভূম জেলা প্রশাসনের উন্নয়নের কাজকর্ম বিষয়ক ‘একা নয়, এক সাথে’ নামের একটি সিডিও প্রকাশ করেন সুব্রতবাবু। শিশুদের পুষ্টির জন্য সজনে পাতা জাতের ‘মরিঙ্গা’ নামে একটি বিশেষ পাউডার প্যাকেট আনুষ্ঠানিক ভাবে সূচনা করেন মন্ত্রী। জেলায় ও জেলার বাইরের আইসিডিএস কেন্দ্রগুলিতে ওই প্যাকেট সরবরাহ নিয়ে আলোচনা হয়। সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “রাস্তা সংস্কার এবং নতুন রাস্তা তৈরির পাশাপাশি পানীয় জল, ময়ূরাক্ষী-দাঁড়কা ও শাল নদীর উপরে সেতু তৈরির প্রস্তাবও মন্ত্রীকে দেওয়া হয়েছে।”