দ্রুত বাউল অ্যাকাডেমি ভবন তৈরি, বাউল ও ফকির গান সংগ্রহ-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হল বুধবার। বাউল, ফকিরদের মতো শিল্পী সাধকদের তালিকা, জীবনপঞ্জি করা নিয়েও আলোচনা হয় জয়দেবের অতিথি ভবনের ওই বৈঠকে।
বাউল অ্যাকাডেমির সভাপতি তথা বিশ্বভারতীর বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মিলনকান্তি বিশ্বাস বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দ্রুত কাজ শুরু করতে বৈঠক হয়েছে। দেশি, বিদেশি গবেষক, পর্যটক এবং অতিথিদের কথা মাথায় রেখে পরিবহণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজা নিয়েও আলোচনা হয়।’’ বাউল দর্শন আর সাধনার কথা মাথায় রেখে অ্যাকাডেমি তৈরির ভাবনাকে আগেই সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলে। রাজ্যের তথ্য সংস্কৃতি বিভাগের সংস্কৃতি অধিকর্তা নমিতা রায় মল্লিক, বিশিষ্ট লোকসঙ্গীত গবেষক ল্যাডলী মুখোপাধ্যায়, উপসংস্কৃতি অধিকর্তা বাসুদেব ঘোষ, সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী-সহ জেলা এবং মহকুমা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ছিলেন বৈঠকে। ভবনের রূপরেখা, বাউল শিল্পীদের পরিচিতি, বাউল গানের রেকডিং, আর্কাইভ, সংরক্ষণ-সহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়। রাজ্যের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ওই অ্যাকাডেমিতে পূর্ণদাস বাউল, পরীক্ষিৎ বালা, কার্তিক দাস বাউল, মনসুর ফকির, কল্পনা অঙ্কুর হাজরা, লক্ষ্মণ দাস বাউলেরা রয়েছেন।
বাউল অ্যাকাডেমির সভাপতি মিলনবাবু জানান, অ্যাকাডেমির ভবনে থাকছে একটি স্টুডিও। যেখানে অত্যাধুনিক রেকর্ডিং ব্যবস্থা থাকবে। সংগৃহীত গান, সিডি, পাণ্ডুলিপির সংরক্ষণের জন্য থাকছে আর্কাইভ। বাউল গান নিয়ে যা কাজ হচ্ছে, তার সংগ্রহ রাখার জন্য লাইব্রেরি এবং মিউজিয়ামের ব্যবস্থা থাকবে। থাকবে ২৫০ আসনের অডিটোরিয়াম কাম সেমিনার হলও। অতিথি নিবাস তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে। মূল ভবনের বাইরে থাকছে মুক্তমঞ্চ। অ্যাকাডেমির জন্য একটি জায়গাও ঘুরে দেখেন কর্মকর্তারা।
তবে জয়দেবের মাটিতে অ্যাকাডেমি হচ্ছে, অথচ সেখানকার কোনও শিল্পী বা সাধক নেই এটা মানতে পারছেন না স্থানীয়দের অনেকেই। শুধু তাই নয়, ব্লক প্রশাসনের পক্ষে তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও কিছু শিল্পীদের ওই বৈঠকে যেতে দেওয়া হয়নি অভিযোগ। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘স্থানীয়েরা অ্যাকাডেমিতে নাও থাকতে পারেন। কিন্তু বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়ে, বসতে না দিয়ে অপমান করা ঠিক নয়।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা অবশ্য বলছেন, ‘‘কোথাও একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকতে পারে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’’