রোজগার নেই। শিশুর পাতে শুধু ভাত ও আলুভাজা। নিজস্ব চিত্র।
পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে জেলার সমস্ত পাথর ক্রাশার ও খাদান বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। পাথর শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন রোজগারহীন হয়ে পড়েছেন। সোমবার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক আছে মালিক পক্ষের। বৈঠকে সমাধান না হলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিল আদিবাসী জনজাতি সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল।
সংগঠনের দাবি, নলহাটি শিল্পাঞ্চলে ডহরনবী, কাঙলাপাহাড়ি, নশিপুর, ছাড়াও বিভিন্ন আদিবাসী গ্রামে পাথর শিল্পাঞ্চল বন্ধের প্রভাব পড়েছে। আদিবাসী শ্রমিকরা পাথর খাদান ও ক্রাশারে কাজ করে দিনে দু'শো থেকে তিনশো টাকা রোজগার করতেন। অল্প রোজগার করে সে ভাবে সঞ্চয় করতে পারেনি বহু পরিবার। কাজ হারিয়ে শোচনীয় অবস্থা পরিবারগুলির। সংগঠনের নলহাটি ব্লক কমিটির সভাপতি দেবীলাল সোরেন বলেন, ‘‘সোমবার জেলা প্রশাসনের বৈঠকে পাথর খাদান ও ক্রাশার খোলার ব্যাপারে কোনও সমাধান সূত্র না হলে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব। আদিবাসী সম্প্রদায়ে বহু মানুষ পাথর শিল্পের সঙ্গে জড়িত। প্রশাসন হঠাৎ করে বন্ধ না করে মালিকদের ধাপে ধাপে বৈধ কাগজ ও পরিবেশ দূষণ রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বললে এই ভাবে শ্রমিকরা রোজগরহীন হয়ে পড়তেন না।’’
রবিবার নলহাটি শিল্পাঞ্চলে গিয়ে দেখা গেল ফাঁকা পাথর শিল্পাঞ্চল। কয়েকজন রক্ষী রয়েছেন যন্ত্র পাহারা দেওয়ার জন্য। অধিকাংশ আদিবাসী গ্রামে মানুষজন নেই। তালা বন্ধ অবস্থায় রয়েছে বহু ঘর। যে সমস্ত পরিবার রয়েছে তাদের খাবার জুটছে ভাত আর একটু আলু ভাজা। তাঁরা বললেন, ‘‘বৃষ্টি না হওয়ায় চাষ বন্ধ। পাথর খাদান ও ক্রাশার বন্ধ। সাধারণ দিনমজুর কী ভাবে রোজগার করবে? প্রশাসন পাথর খাদান ও ক্রাশার না খুললে পেট চালাব কী করে?’’
বাণীওড় পঞ্চায়েতের ডহরবনী গ্রামের লক্ষ্মী টুডু, সুনীতি কোড়ারা বলেন, ‘‘দু’বেলা সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে পারছি না। ভাত আর সামান্য আলু ভাজা দিয়ে ভাত খেতে হচ্ছে। গ্রাম থেকে অনেক পরিবার বর্ধমান ও রাজ্যের অন্য জেলায় কাজ করতে চলে গেছে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করব দ্রুত খাদান ও ক্রাশার খুলে দিলে দুই বেলা খেতে পারব ও সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে পারব।’’