দলের নির্দেশে ছুটিতে যাওয়া ঝালদার তৃণমূল পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করবে ঝালদা পুরসভাই। ১৬ জুন পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে এই মর্মে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা ঠেকানো সম্ভব হলেও তাঁর কাজকর্ম নিয়ে যে দলেরই সিংহভাগ কাউন্সিলর ক্ষুব্ধ, তদন্তের ঘটনায় ফের তা স্পষ্ট হল বলে এলাকার মানুষ মনে করছেন।
বোর্ড মিটিং না ডেকে পুরসভা পরিচালনায় একা সিদ্ধান্ত নেওয়া-সহ একগুচ্ছ অভিযোগ তুলে ঝালদার পুরপ্রধান সুরেশ অগ্রবালের বিরুদ্ধে মে মাসের গোড়ায় অনাস্থা আনেন পুরসভার ১২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৯ জনই। অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে বিরোধীদের সঙ্গেই সই করেন তৃণমূলের চার কাউন্সিলরও। দলীয় নেতৃত্বের চাপে অবশ্য সেই অনাস্থা শেষমেশ ঠেকানো গিয়েছে। তবে, গত ৩ জুন দলীয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত মেনে দু’মাসের জন্য ছুটিতে গিয়েছেন সুরেশবাবু। স্ত্রীর অসুস্থতার কারণেই তিনি এই ছুটি নিয়েছেন বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
পুরসভা সূত্রের খবর, ১৬ জুন পুরবোর্ডের বৈঠকে অভিযোগ তোলা হয়, সুরেশবাবু পুরপ্রধান থাকাকালীন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বিভিন্ন বিষয়ে পুরআইন না মেনে কাজ করেছেন। মোট ১২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১০ জনের উপস্থিতিতে এই আলোচ্য বিষয় সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়েছে।
বিরোধী কংগ্রেস সদস্য মহেন্দ্রকুমার রুংটার দাবি, ‘‘পুরপ্রধানের চেয়ারে সুরেশবাবু নানা বিধি বহির্ভূত কাজ করেছেন। আমরা বিরোধী হিসেবে তা নিয়ে বারবার সরব হয়েছি। পরবর্তীকালে তৃণমূলের কাউন্সিলরেরাও আমাদের অভিযোগের সঙ্গে একমত হয়েছেন।’’ তিনি জানান, বৈঠকে ঠিক হয়েছে, বিধিবহির্ভূত কাজের অভিযোগের তদন্ত হবে। ফরওয়ার্ড ব্লক সদস্য তপন কান্দু বলেন, ‘‘যেখানে যেখানে বেনিয়ম রয়েছে, তা খুঁজে বের করা হবে। তার পরে ফের তা বোর্ডের বৈঠকে পেশ করা হবে।’’
তৃণমূলের ঝালদা শহর কমিটির কার্যকরী সভাপতি তথা ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রদীপ কর্মকারেরও দাবি, ‘‘পুরপ্রধানের আর্থিক বেনিয়মের কিছু নমুনা অডিটেই ধরা পড়েছে। তাই সকলেই বেনিয়ম খতিয়ে দেখার দাবি তুলেছেন।’’ পুরপ্রধানের মোবাইল বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে সুরেশবাবু ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত, ছয় নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পঙ্কজ মন্ডল বলেন, ‘‘আমি ১৬ তারিখের বৈঠকে যাইনি অসুস্থ থাকায়। তাই বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে জানা নেই।’’