বেপরোয়া: একেবারে মহকুমা আদালতের বাইরেই আইনভঙ্গ। ‘নো পার্কিং’ লেখা বোর্ডের নীচে দাঁড় করানো রয়েছে মোটরবাইক। ছবি: সঙ্গীত নাগ
পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কই শুধু নয়, রঘুনাথপুর শহরের অন্যত্রও রাস্তার পাশে গাড়ি রাখা বন্ধ করার দাবিতে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা। রবিবার ওই রাজ্য সড়কে, ক্ষুদিরাম পার্কের কাছে ডাম্পার পিষে দেয় মা ও মেয়েকে। তারপরেই বাসিন্দারা পুলিশ, প্রশাসন ও পুরসভার কর্তাদের কাছে রাস্তার পাশে মোটরবাইক ও গাড়ি রাখায় পথ সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ তোলেন।
পুলিশ ও পুরসভা ওই এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে গাড়ি সরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রচারে নেমেছে। কিন্তু ব্যাঙ্ক, আদালতে আসা লোকজন তাহলে কোথায় গাড়ি, মোটরবাইক রাখবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন।
সেই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হল রঘুনাথপুর পুরসভা। সূত্রের খবর, শহরের মধ্যে জামসোল এলাকায় রাজ্য সড়কের পাশে নিজেদের জমিতে মোটরবাইক ও গাড়ি রাখার স্ট্যান্ড তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়েছে পুরসভা। রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জামসোল এলাকায় প্রায় দুই বিঘা পুরসভার জমি রয়েছে। তার একাংশেই স্ট্যান্ড তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।” শীঘ্রই ওই স্ট্যান্ড তৈরি করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সোমবার ওই এলাকা পরিদর্শনে যাওয়া রঘুনাথপুরের এসডিও আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর, এসডিপিও দুর্বার বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুরপ্রধানের কাছে বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, গত কয়েক বছর ধরে ক্ষুদিরাম পার্ক এলাকা ছাড়াও জীবনবীমা নিগম, আদালত চত্বর, স্টেটব্যাঙ্কের সামনে রাজ্য সড়কের পাশেই গাড়ি ও মোটরবাইক দাঁড় করিয়ে রাখার কারণে সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়েছে রাস্তা। যার জেরে তৈরি হচ্ছে যানজট। তাতেই ওই এলাকা দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে পড়েছে।
পুলিশ প্রশাসন রাস্তার পাশে গাড়ি না রাখতে অনুরোধ করলেও তা যে বিশেষ কাজে দেয়নি, তা এই ক’দিনে বোঝা গিয়েছে। আদালতের সামনে ‘পার্কিং নিষিদ্ধ’ লেখা বোর্ড রয়েছে। সেই বোর্ডের সামনেই দেখা গিয়েছে সার দিয়ে মোটরবাইক রয়েছে। আইনজীবী অনিরুদ্ধ দত্ত বলেন, ‘‘শুধু আদালতে আসা লোকজনই নয়, বাজার-হাট করতে আসা লোকজনও এখানে মোটরবাইক রেখে যান।’’
আদালতে কাজে আসা দুই বাসিন্দা সার্থক মাহাতো, নিতাই পরামানিক, ব্যাঙ্কের কাজে আসা প্রশান্ত রায়েরা বলেন, ‘‘মোটরবাইক, গাড়ি রাখার বিকল্প জায়গা নেই। তাই বাধ্য হয়েই রাস্তার পাশে আগের মতোই রাখতে হচ্ছে।’’ পুলিশও জানাচ্ছে, পার্কিংয়ের সমস্যা রয়েছে বলেই জোরাজুরির বদলে তারা গাড়ি সরানোর জন্য সচেতনতা প্রচারে জোর দিচ্ছেন।
পুরপ্রধান জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার প্রচারে নেমে বাস্তব সমস্যা দেখার পরেই তাঁরা পার্কিংয়ের জন্য স্ট্যান্ড তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছেন তাঁরা। ভবেশবাবু বলেন, ‘‘জামসোল এলাকায় ওই জমিতে আপাতত বেড়া দিয়ে স্ট্যান্ড তৈরি করা হবে। পরে স্থায়ী স্ট্যান্ড তৈরি করা হবে।” সেখানে সাইকেল, মোটরবাইক ও গাড়ি রাখলে যথাক্রমে এক, দুই ও পাঁচ টাকা নেওয়া হবে। পুরপ্রধান জানান, স্ট্যান্ডে গাড়ি, মোটরবাইক রাখলে তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। তাই ঠিকার ভিত্তিতে দুই কর্মী রাখা হবে স্ট্যান্ডে। ভাড়া বাবদ পাওয়া অর্থ তাঁদের দেওয়া হবে।