অনুপস্থিত আধিকারিক, বেতন নেই পুর-কর্মীদের

পুরসভা সূত্রের খবর, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কয়েকদিন ধরে পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক রাজকুমার চৌধুরীর সঙ্গে পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকারের ‘মনোমালিন্য’ চলছে।

Advertisement

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়

ঝালদা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:১০
Share:

বিবাদের জেরে নভেম্বরে বেতন পাননি পুরকর্মীরা

পুরপ্রধানের সঙ্গে ‘মনোমালিন্যের’ জেরে কাজে আসছেন না ঝালদা পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক। যার জেরে এখনও নভেম্বরের বেতন পাননি পুরুলিয়ার ধালদা পুরসভার তিনশোরও বেশি কর্মী। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পেরোতে বসলেও বেতন না পাওয়ার ক্ষোভে ফুঁসছেন কর্মীরা।

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কয়েকদিন ধরে পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক রাজকুমার চৌধুরীর সঙ্গে পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকারের ‘মনোমালিন্য’ চলছে। পুরসভায় আসা কার্যত বন্ধ করে দিয়েছেন রাজকুমারবাবু। বৃহস্পতিবারও তিনি পুরসভায় আসেননি। পুরসভা সূত্রের খবর, নভেম্বরের শেষ দিকে কোনও এক দিন ঘণ্টা দু’য়েকের জন্য শেষ বার পুরসভায় এসেছিলেন রাজকুমারবাবু।

বৃহস্পতিবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে কার্যনির্বাহী আধিকারিক বলেন, ‘‘কর্মীরা ঠিক সময়ে তাঁদের বেতন পাবেন। দুশ্চিন্তার কিছু নেই।’’ কিন্তু কবে কর্মীরা বেতন পাবেন, কবে তিনি পুরসভায় আসবেন, সে সম্পর্কে কিছু বলেননি রাজকুমারবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটা সংবাদমাধ্যমকে চিন্তা করতে হবে না।’’

Advertisement

রাজকুমারবাবুর অনুপস্থিতিতে পুরসভার নানা উন্নয়নমূলক কাজ আটকে রয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে দাবি করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্পের চেক আটকে রয়েছে।

পুরসভা সূত্রের খবর, আগে পুরসভার খরচ সংক্রান্ত চেকে পুরপ্রধান ও নির্বাহী আধিকারিক সই করতেন। কিন্তু সম্প্রতি রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর এক নির্দেশিকায় জানিয়েছে, পুরপ্রধান আর চেকে সই করতে পারবেন না। নির্বাহী আধিকারিক এবং ফিনান্স অফিসার চেকে সই করবেন।

কর্মীরা বেতন না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ পুরসভার কর্মীরা। ‘পুর-কর্মচারী ফেডারেশন’-এর সম্পাদক কৃষ্ণকুমার সাউ বলেন, ‘‘কর্মীরা এখনও নভেম্বরের বেতন হাতে পাননি। আর দিন কয়েক দেখব। তার পরে আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।’’ এক কর্মীর কথায়, ‘‘আমার বেতন খুবই অল্প। সেটাও যদি সময়ে না পাই, তবে সংসার চালাব কেমন করে!’’

প্রশাসনের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, বিধি ভেঙে পুরপ্রধান তাঁকে বিভিন্ন প্রকল্পের চেকে সই করতে বাধ্য করছেন বলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ করেছিলেন রাজকুমারবাবু। পুরপ্রধানের সঙ্গে ‘বিরোধ’ সম্পর্কে রাজকুমারবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ ব্যাপারে যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সংবাদমাধ্যকে কেন জানাব?’’

পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকার অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পুরসভায় অচলাবস্থার জন্য তিনি দায়ী করেছেন রাজকুমারবাবুকেই।

প্রদীপবাবুর দাবি, ‘‘উনি (নির্বাহী আধিকারিক) দফতরে আসছেন না। মিথ্যা অভিযোগ করে বেড়াচ্ছেন। কর্মীরা এখনও গত মাসের বেতন হাতে পাননি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ওই আধিকারিক কোনও এক কাউন্সিলরের নির্দেশে পুরসভায় অচলাবস্থা তৈরির চেষ্টা করছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট জায়গায় জানিয়েছি।’’ যদিও সেই কাউন্সিলরের নাম জানাতে রাজি হননি পুরপ্রধান।

অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজকুমারবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি কারও অঙ্গুলিহেলনে চলার লোক নই। এই কথা পুরপ্রধানের মুখে মানায় না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement