আদালতের পথে ধৃত তৃণমূল নেতা বাপি চক্রবর্তী। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।
দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত এক তরুণী তাঁকে সাহায্য করতে ডেকেছিলেন। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত সেই রক্ষকের বিরুদ্ধেই শ্লীলতাহানীর অভিযোগ করলেন তিনি। শুধু শ্লীলতাহানী নয়, সোমবার রাতে আক্রান্ত ওই তরুণীর স্বামী-সহ পুলিশকেও মারধরের অভিযোগ উঠেছে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে। তাঁর নাম পীযূষ চক্রবর্তী ওরফে বাপি। ঘটনাচক্রে তিনি বাঁকুড়া জেলার যুব তৃণমূল নেতা। এই ঘটনায় পুলিশ তাঁকে ওই রাতেই আটক করে। পরে মঙ্গলবার সকালে গ্রেফতার করা হয়। এ দিন বাঁকুড়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে আগামী ২৩ জুন পর্যন্ত তাঁকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
কী হয়েছিল ওই দিন?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, দুর্গাপুরের এক দম্পতি ওই দিন রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ বাসে করে বাঁকুড়া এসে পৌঁছন। তাঁদের সঙ্গে আরও কয়েক জন পরিচিত মানুষ ছিলেন। বাসস্ট্যান্ডে নামামাত্র বেশ কয়েক জন যুবক তাঁদের উত্যক্ত করতে শুরু করে। বিষয়টা এর পর বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, ঘটনাস্থলে থাকা কয়েক জন তখন স্থানীয় তৃণমূল নেতা বাপির মোবাইল নম্বর দিয়ে তাঁর সঙ্গে ওই মহিলাকে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেন। সেই মতো ওই তরুণী বাপিকে ফোন করে বিষয়টি বলেন। ঘটনাস্থলে হাজির হন ওই নেতা। কিন্তু, আক্রান্তদের উদ্ধার করার বদলে তিনি ওই তরুণীর শ্লীলতাহানী করেন বলে অভিযোগ। বাধা দিতে গেলে তাঁর স্বামীকে মারধর করা হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে তাদের উপর চড়াও হন ওই নেতা। এমনকী, পুলিশকর্মীদের ব্যাপক ভাবে মারধর করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশ মহিলাকে শ্লীলতাহানীর পাশাপাশি সরকারি কাজে বাধা এবং কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের মারধরের অভিযোগে মামলা রুজু করেছে।
একটি ভেষজ পণ্য প্রস্তুতকারী সংস্থায় কর্মরত ওই ওই মহিলা এ দিন বলেন, ‘‘রক্ষক যে ভক্ষক হয়, এই প্রথম তার প্রমাণ পেলাম।’’
তবে তৃণমূল বাপির বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ মেনে নিতে নারাজ। বাঁকুড়া জেলা সভাপতি অরূপ চক্রবর্তী এ দিন বলেন, ‘‘বাপি এমনটা করতে পারে বলে আমরা বিশ্বাস করি না। ওকে ফাঁসানো হয়েছে।’’