এমনই ভিড় হয়েছিল ভারত সেবাশ্রমের অনুষ্ঠানে। নিজস্ব চিত্র
মন্দিরে তখন তুমুল ভিড়। ভক্তদের অনেকেই ব্যস্ত পুজো দিতে, প্রসাদ নিতে। অভিযোগ, সেই ভিড়ের সুযোগে চার মহিলার গলার হার ছিনতাই করেছে দুষ্কৃতীরা। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে সিয়ান মুলুক পঞ্চায়েতের মুলুক গ্রামের ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছরের মতো এ বছরও ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে স্বামী প্রণবানন্দজী মহারাজের ১২৫ তম শুভ আবির্ভাব তিথি উপলক্ষে ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত তিন দিন ব্যাপী মহোৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। স্বামী প্রণবানন্দজী মহারাজের ১২৫ তম আবির্ভাব উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এ বছরও কয়েক হাজার ভক্তের ভিড় জমেছিল আশ্রমে। দুষ্কৃতীরা সেই সুযোগ কাজে লাগায় বলে অভিযোগ।
এ দিন সকাল থেকে মঙ্গলারতি থেকে শুরু করে গীতা, চণ্ডীপাঠ, মহাপ্রসাদ বিতরণের আয়োজন রাখা হয়েছিল। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রসাদ বিতরণের সময় প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়েছিল আশ্রমের মূল মন্দিরে। এর পরই সেখান থেকে আচমকাই চার মহিলা গলার হার চুরি হয়েছে বলে চিৎকার করতে থাকেন। ঘটনা জানাজানি হতে হইচই পড়ে যায় আশ্রম চত্বরে। আশ্রমের তরফ থেকে বোলপুর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। দ্রুত পৌঁছয় বোলপুর পুলিশ। যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নানুরের উচকরণ গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণা চৌধুরী স্বামীজির জন্মতিথি উপলক্ষে পুজো দিতে এসেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ভিড়ের মধ্যে হঠাৎ গলায় থাকা সোনার হার টেনে নেওয়া হয়েছে। শুরুতে ঠাওর না হলেও পরে বোঝেন গলায় হার নেই। একই অভিজ্ঞতা হয়েছে রায়পুর থেকে আসা অপর্ণা লাহা, বোলপুরের কালিকাপুরের বাসিন্দা জয়াবতী ঘোষ ও আর এক জনের। ছিনতাইয়ের খবর ছড়িয়ে পড়তে মুলুকের ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে চাঞ্চল্য ছড়ায়। স্থানীয় সূত্রের দাবি, মুলুক ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে বছর দুই আগে এই রকমই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছিল। সেবার একটি সোনার হার ছিনতাই হয়েছিল। এ বার চারটি হার ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্দিরের প্রবেশপথ ও আশ্রমের ভিতরে ১২টি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। মন্দিরের নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষীও রয়েছেন। পাশাপাশি তিন দিনের অনুষ্ঠান উপলক্ষে সিভিক ভলান্টিয়ারও মোতায়েন করা হয়েছে আশ্রমে। তার পরেও কী ভাবে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটল, সেই নিয়েই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। ভক্ত ও আশ্রমের একাংশের দাবি, ঢিলেঢালা নজরদারির জন্যই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। কৃষ্ণাদেবী, অপর্ণাদেবীরা বলেন, ‘‘প্রসাদ খাওয়ার সময় পর্যন্ত গলায় হার ছিল। হাত ধুতে যাওয়ার সময় ঠেলাঠেলিতে গলায় টান পড়ে। তার পরেই লক্ষ্য করি হারটি নেই।’’ মুলুক ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের
স্বামী সঙ্ঘমিত্রানন্দ মহারাজ বলেন, ‘‘চার ভক্তের গলার হার ছিনতাইয়ের খবর পেয়েছি। বিষয়টি পুলিশকে দেখতে বলেছি।’’