প্রতীকী ছবি।
ফের রাস্তায় ফালি (লোহার তীক্ষ্ণ ফলা) ফেলে গাড়িতে লুটপাটের অভিযোগ উঠল পুরুলিয়ায়। পুরুলিয়া-বরাবাজার রাস্তায়, মঙ্গলবার রাতে দুষ্কৃতীরা ওই ভাবে হামলা চালায় বলে দাবি করেছে পুলিশ। এক গাড়ি চালক বুধবার বরাবাজার থানায় এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করেন।
এসডিপিও (মানবাজার) আফজল আবরার বলেন, ‘‘বরাবাজার থেকে পুরুলিয়া রাস্তায় মঙ্গলবার গভীর রাতে বেশ কয়েকটি গাড়িতে ফালি পেতে হামলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ জমা না পড়লেও, আমরা দুষ্কৃতীদের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছি।’’
রাস্তার উপরে পাতলা ও দৃঢ় লোহার ছোট ছোট পাত পুঁতে রাখা হয়। ওই পাতকে ‘ফালি’ বলা হয়। গাড়ির চাকা ফালির উপর দিয়ে গেলেই ফুটো হয়ে যায়। চালক গাড়ি নিয়ে থেমে গেলে দুষ্কৃতীরা চড়াও হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, বরাবাজার-পুরুলিয়া রাস্তায় বরাবাজারের ধেলাৎবামু পঞ্চায়েত এলাকার সৎসায়েরডি গ্রামের কাছে মঙ্গলবার অনেক রাতে ফালি দেওয়ার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় কিছু বাসিন্দার দাবি, বড় একটি ট্রাক, ট্রাক্টর ও একটি বাস-সহ চারটি গাড়িতে হামলা চালানো হয়। পাথরের আঘাতে একটি ট্রাকের চালকের সামনের কাচ ভেঙেছে। সেই চালককে মারধর করে তাঁর মোবাইল ফোন, কিছু টাকা এবং থলেয় রাখা চাল কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে ওই ব্যক্তি পরে গ্রামবাসীর কাছে অভিযোগ করেন।
পুলিশের দাবি, খবর পাওয়া মাত্র টহলদারি গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তবে তার আগেই দুষ্কৃতীরা পালায়। দুষ্কৃতী দলটি অন্য গাড়িতে পাথর এবং লাঠির ঘা দিলেও লুটপাট চালাতে পারেনি বলে পুলিশের দাবি।
পুরুলিয়া জেলায় এক সময় প্রায়ই ‘ফালি’ পেতে ছিনতাইয়ের অভিযোগ শোনা যেত। যা নিয়ে অনেক সময় পুলিশকে অস্বস্তিতেও পড়তে হয়েছে। তবে পরে পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশ কয়েক বছর ধরে জেলায় ফালি পেতে হামলার খবর মেলেনি। জেলার পুলিশ কর্তাদের দাবি, জেলার প্রায় প্রতিটি থানায় রাস্তায় টহল বাড়ানো, সিভিক কর্মীদের নজরদারি বাড়ায় ‘ফালি’ পাতা আটকানো গিয়েছে।
তবে ‘লকডাউন’-এর মধ্যে রুজি বন্ধ হওয়ায় ফের কি ‘ফালিবাজেরা’ সক্রিয় হয়েছে, এই প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। ভাবনায় পুলিশও। জেলার এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘করোনার প্রভাবে রাস্তাঘাটে লোকজন ও গাড়ির সংখ্যাও কম। সে জন্য দুষ্কৃতীরা সক্রিয় হতে পারে। তবে স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করে কয়েকটি সূত্র পাওয়া গিয়েছে। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যে ফালি-কাণ্ডে যুক্ত দুষ্কৃতীদের ধরে ফেলা যাবে।’’