নিরাপদে: বিয়ে রোখা সেই স্কুলছাত্রী। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়
মাঝবয়সী লরি চালকের সঙ্গে বিয়ের ঠিক করেছিলেন মা। পুলিশ-প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়ে নিজের সেই বিয়ে রুখল নবম শ্রেণির এক ছাত্রী।
শুক্রবার সিউড়ি পুর এলাকার ঘটনা। ১৮ বছরের আগে পরিবার যেন ওই নাবালিকার বিয়ে না দেয়, সেটা বোঝানোর পাশাপাশি মেয়েটির পড়াশোনার যাবতীয় বন্দোবস্ত করার অশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
সিউড়ি পুর এলাকার বাসিন্দা বছর পনেরোর ওই ছাত্রী শহরেরই একটি স্কুলে পড়ে। দাদা পড়ে একাদশ শ্রেণিতে। গরিব পরিবার। অভিযোগ, ছাত্রীটির বাবা বাড়িতে না থাকা কালীন এক মধ্যবয়সী লরিচালকের সঙ্গে বিয়ের ঠিক করে দেন ছাত্রীর মা। রাজি না হলে, বৃহস্পতিবার মেয়েটিকে চরম মারধর করা হয়। বাধা দিতে গিয়ে মায়ের কাছে মার খায় মেয়েটির দাদাও। এরপরেই ভাইবোন মা-কে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে ছিটকিনি এঁটে দিয়ে প্রতিবেশীদের সাহায্য চায়।
ঘটনার খবর পান এলাকায় সমাজকর্মী বলে পরিচিত মহম্মদ রফিক। তিনি সিউড়ি মহিলা থানায় ওই ছাত্রীটিকে নিয়ে আসেন। খবর যায় প্রশাসনের কাছেও। রাতটি পুলিশি নজরদারিতে কাটানোর পরে শুক্রবার সকালে অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) রঞ্জনকুমার ঝা ছাত্রীর পরিবারকে প্রশাসন ভবনে ডেকে পাঠান। মেয়েটি জেলাশাসককে জানায়, কোনও ভাবেই সে এখন বিয়ে করতে চায় না পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চায়। এমন কাজ মেয়ের জন্য ক্ষতিকারক বোঝানো হয় ছাত্রীর মা-বাবাকে। পরে এডিএম, জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক পাপিয়া চট্টোপাধ্যায় ও শেষে জেলা শিশুসুরক্ষা আধিকারিক নিরুপম সিংহের কাছে তাঁদের পাঠান। রফিক বলেন, ‘‘এমন ঘটনা সামনে আসার পরে বসে থাকা যায় না।’’
নিরুপমবাবু জানান, ছাত্রীর মা ভুল স্বীকার করেছেন। ঠিক হয়েছে আপাতত মায়ের কাছে নয়, সে থাকবে ঠাকুমার কাছে। সিউড়ি মহিলা থানা এবং জেলা চাইল্ড লাইন পর্যায়ক্রমে নজরজারি চালাবে তার সঙ্গে যেন এমন ঘটনা আর না ঘটে। ইতিমধ্যেই কন্যাশ্রী প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত হয়েছে মেয়েটির। এডিএম সেটি দ্রুত করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রশাসন পাশে দাঁড়ানোয় খুশি নবম শ্রেণির ছাত্রী।