পশুপাখি বাড়িয়ে মিনি জু ঢেলে সাজার ভাবনা

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার বাঁকুড়ার ইঁদপুরের বাগডিহার সভা থেকে বন্যপ্রাণ সপ্তাহের সূচনা করেন।

Advertisement

প্রশান্ত পাল

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৩৭
Share:

পরিদর্শন: সুরুলিয়া মিনি জু-এ হরিণকে খাওয়াচ্ছেন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। সঙ্গে ডিএফও। ছবি: সুজিত মাহাতো

জঙ্গলে কখনও সখনও চিতাবাঘ, হায়নার দেখা পায়। কিন্তু তা দেখা ক’জনেরই বা ভাগ্যে থাকে! এ বার তাই পুরুলিয়া শহরের কাছেই সুরুলিয়ার মিনি জু-তে সেই সব বন্যপ্রাণী বছরভর দেখার সুযোগ করে দেওয়ার ভাবনাচিন্তা শুরু করল রাজ্য সরকার। শুধু তাই নয়, বাঁদর, হনুমান, ভালুক, ময়ূর-সহ অন্যান্য পশু-পাখির সংখ্যাও বাড়াতে চাইছে বন দফতর। এক কথায়, মিনি জু-কে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার বাঁকুড়ার ইঁদপুরের বাগডিহার সভা থেকে বন্যপ্রাণ সপ্তাহের সূচনা করেন। সেই দিনেই পুরুলিয়া ২ ব্লকের সুরুলিয়ার মিনি জু পরিদর্শনে গিয়ে এই ভাবনার কথা জানালেন রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো এবং ডিএফও (পুরুলিয়া কংসাবতী উত্তর) অমৃতা দত্ত।

পর্যটনকে ঘিরে পুরুলিয়ার বিকল্প অর্থনীতির কথা বারবারই শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে। অযোধ্যাপাহাড় থেকে গড়পঞ্চকোট, জয়চণ্ডীপাহাড় থেকে মুরগুমা জলাধার, বড়ন্তি থেকে পাকবিড়রার মতো প্রাকৃতিক ও প্রত্নসম্পদে সমৃদ্ধ স্থানগুলিকে ঘিরে ট্যুরিজম সার্কিট গড়ে তোলার ভাবনা তাঁর রয়েছে। সেই ভাবে পর্যটনস্থানগুলির উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে। সেই তালিকায় মিনি জু-কে অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে প্রশাসন। তাই মিনি জু-কে কী ভাবে আরও আকর্ষণীয় করা যায়, সেই পরিকল্পনা করতে বন-কর্তাদের নিয়ে মন্ত্রী পরিদর্শনে আসেন।

Advertisement

বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে বন্যপ্রাণী পুনর্বাসন কেন্দ্র হিসেবেই এর পরিচিতি ছিল। পরে এই পুনর্বাসন কেন্দ্রকে মিনি জু হিসেবে অনুমোদন দেয় সেন্ট্রাল জু অথরিটি। বর্তমানে এখানে ৫০টির উপরে হরিণ, দু’টি সজারু, দু’টি ভালুক, দু’টি ময়ূর, তিনটি মদনটাক পাখি, ময়াল-সহ কিছু জীবজন্তু আছে।

এ দিন চিড়িয়াখানা ঘুরে শান্তিরামবাবু বলেন, ‘‘নতুন প্রজন্ম এখন আর সে ভাবে জীবজন্তু দেখতে পাচ্ছে কোথায়? সার্কাসেও বাঘ-সিংহের খেলা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। চিড়িয়াখানা ছাড়া সে সুযোগ নেই। পুরুলিয়ায় এখন অনেক মানুষ আসছেন। পর্যটকেরা নানা জিনিস ঘুরে দেখতে চান। তাঁদের সঙ্গে ছোট্ট বাচ্চারাও থাকে। তারাও মিনি জু-তে এসে খুশি হবে।’’ তিনি জানান, এ দিনই বাঁকুড়া থেকে মুখ্যমন্ত্রী বন্যপ্রাণ সপ্তাহের উদ্ধোধন করেন। তাই এই দিনটি থেকেই মিনি জু সাজানোর পরিকল্পনা কার্যকর করতে উদ্যোগী হয়েছেন তাঁরা।

শান্তিরামবাবু বলেন, ‘‘এখন যে সব প্রাণী রয়েছে, তার সংখ্যা যেমন বাড়ানো হবে, তেমনই চিতাবাঘ, হায়নার মতো এই জেলার আবহাওয়ায় সহনশীল জীবজন্তুও নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে। কী ধরনের প্রাণী রাখা যাবে, তা নিয়ে আমরা সেন্ট্রাল জু অথরিটির সঙ্গে কথা বলব।’’ তিনি জানান, পরিকাঠামো নির্মাণে ইতিমধ্যেই পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ থেকে এই চিড়িয়াখানার জন্য দু’কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

ডিএফও দত্ত জানান, পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। চিড়িয়াখানায় প্রবেশপথের বাঁ দিকে একটি সুদৃশ উদ্যান তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। বাইরের দিকে একটি সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রও গড়া হয়েছে। প্যাঙ্গোলিনের খাঁচা-সহ আরও বন্যপ্রাণীদের জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ার কাজ শুরু হয়েছে। বন্যপ্রাণীদের জন্য চিকিৎসা কেন্দ্র গড়ে তোলারও ভাবনা রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement