বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ফল-বিভ্রাট

এ বার ক্ষোভ ছড়াল সিউড়ি কলেজেও

ফলে বিভ্রাট নিয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছেই। এ বার তার আঁচ এসে পড়ল সিউড়িতে। কলেজের অনুষ্ঠানে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আসছেন খবর পেয়ে ফলপ্রকাশে ভুল নিয়ে অভিযোগ জানাতে তৈরি হয়েছিল এক দল পড়ুয়া। কিন্তু, উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার বা মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়— কেউই না আসায় মঙ্গলবার সিউড়ির বিদ্যাসাগর কলেজে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন ছাত্রছাত্রীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৩৬
Share:

ছাত্রদের বিক্ষোভের জেরে উত্তিজিত সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। —নিজস্ব চিত্র।

ফলে বিভ্রাট নিয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছেই। এ বার তার আঁচ এসে পড়ল সিউড়িতে।

Advertisement

কলেজের অনুষ্ঠানে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আসছেন খবর পেয়ে ফলপ্রকাশে ভুল নিয়ে অভিযোগ জানাতে তৈরি হয়েছিল এক দল পড়ুয়া। কিন্তু, উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার বা মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়— কেউই না আসায় মঙ্গলবার সিউড়ির বিদ্যাসাগর কলেজে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন ছাত্রছাত্রীরা। বিক্ষোভের জেরে পণ্ড হতে বসেছিল কলেজের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান। শেষমেশ কলেজের শিক্ষকদের হস্তক্ষেপে অনুষ্ঠান হয়।

ছাত্রদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় বিএসসি এবং বিকমের পার্ট ২-এর যে ফল প্রকাশ করেছে তা অজস্র ভুলে ভরা। এখনও পর্যন্ত বিএ পার্ট ২-এর ফল প্রকাশই করতে পারেননি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পার্ট ৩ পরীক্ষার দিন ঘোষণা করতে পারেননি। এতে তাঁরা রীতিমতো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে পড়ুয়াদের দাবি। দিন কয়েক ধরেই এ নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল বিদ্যাসাগর কলেজের পড়ুয়াদের একাংশের মধ্যে। এই সব বিষয নিয়ে উপাচার্য ও শিক্ষা-স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর কাছে দাবিপত্র পেশ করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু দু’জনেই এ দিন না আসায় তা সফল হয়নি। আর তাতেই ক্ষোভ ছড়ায় পড়ুয়াদের মধ্যে।

Advertisement

ওই পড়ুয়াদের দাবি, তাঁরা যাতে দাবিপত্র দিতে না পারেন, সে জন্য সম্মানীয় অতিথিদের না আসার ব্যবস্থা করেছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। ক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীরা ‘হোকআলোড়ন’ লেখা ব্যানার নিয়ে স্লোগান তুলে কলেজ চত্বর মিছিল করার পাশাপাশি রস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের হলেও ঢুকে পড়েন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মহাদেব চন্দ্রের পদত্যাগও দাবি করতে থাকেন তাঁরা। অভিযোগ, আন্দলনে যোগ দেওয়া ছাত্রদের সঙ্গে তিনি শিক্ষকসুলভ আচরণ করেননি।

এ ভাবে বিক্ষোভ শুরু হওয়ায় ক্ষিপ্ত হন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মহাদেববাবু। তিনি মাইক হাতে নিয়ে বিক্ষোভে সামিল হওয়া পড়ুয়াদের ধমকা দেন। তিনি জানান, ফলের অসঙ্গতি নিয়ে তিনি নিজেও চিন্তিত। তবে অতিথিদের অনুষ্ঠানে না আসার ব্যাপারে তাঁর কোনও ভূমিকা নেই। কিন্তু ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে বিতণ্ডা বাড়তেই থাকে। উত্তেজিত হয়ে পড়ায় কিছুটা অসুস্থ বোধ করেন মহাদেববাবু। পরিস্থিতি জটিল আকার নিচ্ছে দেখে কলেজের অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকার পরিস্থিতি সামাল দিতে নামেন। ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা তাঁদের কথা শুনে অনুষ্ঠান হল থেকে বেরিয়ে যান।

কলেজের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে ঢোকার আগে মিছিল ক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের।

(ডান দিকে) হঠাৎ-ই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে ঘিরে শুরু হল বিক্ষোভ। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত।

ওই পডুয়াদের দাবি, গত বার মার্চে পার্ট ৩ পরীক্ষা হয়ে গেলেও এ বার তা কবে হবে এখনও অজানা। পরীক্ষা দেরিতে হলে ফল বেরোতেও বাড়তি সময় লাগবে। তখন অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএ পাঠ্যক্রমে ভর্তির সুযোগ তো দূর, এই বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়ার সুযোগ পাওযা যাবে কি না সন্দেহ। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদের বক্তব্য, ‘‘এ সবের জন্যই আমাদের ক্ষোভ। এ নিয়ে আন্দোলন চলবে।’’

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সঙ্গে পরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার বলেন, ‘‘ওই কলেজে আমার যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু কাজ পড়ে যাওয়ায় যেতে পারিনি। ওখানে কী ঘটেছে, সে নিয়ে কিছু বলতে পারব না।’’ মন্ত্রী আশিসবাবু বলেন, ‘‘আমি ছাত্র-বিক্ষোভকে ভয় পাই না। নিজে ছাত্র রাজনীতি করেছি। যেহেতু নির্বাচনী বিধি জারি রয়েছে, বিতর্ক এড়ানোর জন্য যাইনি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement