বাজার ফাঁকা, যত ভিড় গন্ধেশ্বরী তীরে

জিএসটির বিরুদ্ধে ডাকা মিষ্টি ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটের কারণে শহরের বেশির ভাগ মিষ্টির দোকান বন্ধ ছিল এ দিন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৭ ০২:২৯
Share:

ফাইল চিত্র।

ঝমঝম বৃষ্টি। সুনসান পথঘাট। রাস্তার দু’পাশের বেশির ভাগ দোকানই বন্ধ। আনাজের বাজারেও খদ্দেরের অভাবে মাছি তাড়ানোর অবস্থা। যে সব চা, চপ, তেলেভাজার দোকানে সকাল থেকে ভিড়ে লেগে থাকত, সেগুলিও বন্ধ।

Advertisement

মঙ্গলবার বাঁকুড়া শহরের রাস্তা যখন কার্যত লোকশূন্য, সেই সময় সতীঘাটে গিজগিজে মানুষ। সেখানে অগুণতি ছাতা মাথায় লোকজন কজওয়ে ছাপিয়ে গন্ধেশ্বরীর বয়ে যাওয়া দেখছেন মুগ্ধ হয়ে। অনেকে আবার মোবাইলে ছবি তুলছেন, কেউ বা নিজস্বী তুলে সোশ্যালসাইটে ‘আপলোড’ তুলতে ব্যস্ত।

শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া টানা নিম্নচাপ চলেছে মঙ্গলবারও। রাত হোক বা দিন, বৃষ্টি থামার বালাই নেই। আর তার জেরেই মঙ্গলবার বাঁকুড়া জেলা শহরের জনজীবন কার্যত অঘোষিত বন্‌ধের চেহারা নিয়েছে। এ দিন শহরের বাজারগুলিতে আশপাশের গ্রাম থেকে আসা চাষিদের ভিড় ছিল কম।

Advertisement

জিএসটির বিরুদ্ধে ডাকা মিষ্টি ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটের কারণে শহরের বেশির ভাগ মিষ্টির দোকান বন্ধ ছিল এ দিন। শহরের রানিগঞ্জ মোড়ের এক মিষ্টি ব্যবসায়ীর কথায়, “বৃষ্টির কারণে আমাদের ডাকা ধর্মঘট প্রায় সর্বস্তরের ব্যবসায়ীদের একটা বড় অংশই পালন করে ফেললেন।”

বৃষ্টিতে এক দিকে কিছু লোক ঘর-বন্দি হয়ে রইলেন। জল-কাদা ঠেলতে তাঁদের অনীহা। কিন্তু বর্ষার জন্য মনে অবসাদও অনেকের। বাঁকুড়ার মিথিলার একটি আবাসনের বধূ মানু কর্মকারের কথায়, “এক টানা এই বৃষ্টি আর ভাল লাগছে না। মনে হচ্ছে যেন এক যুগ সূর্যের মুখ দেখিনি। একটানা ঘর-বন্দি হয়ে রয়েছি।”

অন্য দিকে, যাঁদের হুজুগ বেশি তাঁরা এই বৃষ্টির মধ্যেও জল ঠেলে সতীঘাটে ভিড় করলেন। বাঁকুড়ার চকবাজারের প্রবীণ ব্যবসায়ী কাশীনাথ কুণ্ডুর রসিকতা, “টানা বৃষ্টিতে বাজারে কেনাকাটার ভিড় নেই, উল্টে যত ভিড় সতীঘাট মোড়ে গন্ধেশ্বরীর বান দেখতে।’’

এ দিন সকাল থেকেই গন্ধেশ্বরীর জল বইছে কজওয়ে ছাপিয়ে। তা দেখতে যাওয়া উৎসাহী মানুষের ভিড় সামলাতে হিমশিম খান পুলিশ কর্মীরা। সেখানে কম বয়সিরা যেমন ভিড় করেছেন, তেমনই বয়স্ক লোকেরাও কম ছিলেন না। কেউ কেউ আবার মোটরবাইক হাঁকিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে দল বেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বর্ষার প্রকৃতি দেখতে।

অনেকেই ছবি তুলতে কজওয়ের দিকে এগোনোর চেষ্টা করেন। তা নজরে আসতেই তেড়ে যান পুলিশ কর্মীরা। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘আগের কজওয়ে পার হওয়ার সময় কতজন যে ভেসে গিয়েছে! তবুও লোকজনের হুঁশ নেই।’’ পাঠকপাড়ার যুবক সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “কজওয়ে ছাপিয়ে গন্ধেশ্বরীর জল যখন নদীতে আছড়ে পড়ে তা দেখার মতো। প্রতিবার বান ডাকলেই দেখতে যাই। ওই দৃশ্যের টানই আলাদা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement