গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনে মাওবাদী পোস্টার। নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়নি। লাগু হয়নি আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি। কিন্তু ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে পড়েছে রাজ্যে। ভোটারদের মনোবল বাড়াতে জেলায় জেলায় টহলদারিও চালাচ্ছেন তাঁরা। এই আবহেই ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে মাওবাদীরা পোঁস্টার সাটিয়েছে পুরুলিয়া জেলার বেশ কয়েকটি এলাকায়। ফলে ভোটের মুখে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
অযোধ্যা পাহাড় সংলগ্ন আড়শা থানার পুয়াড়া গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সদর দরজার পাশে মিলেছে পোস্টার। কান্টাডি এবং হেরোডি গ্রামেও একই রকম পোস্টার ঘিরে ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। পোস্টারে অযোধ্যা পাহাড়ে ঘাঁটি তৈরির ঘোষণা করেছে মাওবাদীরা। পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে ভোট বয়কটের ডাক। নয়া কৃষি আইন বাতিল, অবিলম্বে স্কুল-কলেজ খোলার দাবিও জানানো হয়েছে। মাওবাদী সদস্য অর্ণব দাম ওরফে বিক্রমকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য স্থানীয় বাসিন্দা পেলারাম সোরেনকে দেওয়া হয়েছে কড়া হুঁশিয়ারি।
অযোধ্যা পাহাড় সংলগ্ন ৯টি থানা এলাকা মাওবাদী অধ্যুষিত। যদিও পুলিশের দাবি, মাওবাদীদের উপস্থিতি নেই। কিন্তু ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর বরাবাজার থানার বেড়াদা গ্রামে পুরুলিয়া জেলা পরিষদের তৃণমূলের মেন্টর তথা প্রাক্তন মাওবাদী সদস্য অঘোর হেমব্রমের উপস্থিতিতে একটি সভা হয়। সেখানে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন তাঁরা মাওবাদী আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন বলে দাবি করেন। তাঁদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে সমাজের মূলস্রোতে ফিরেও চাকরি পাননি। চাকরি না পেলে ফের মাওবাদী আন্দোলনে ফিরে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন তাঁরা। চাকরির দাবিতে ১ ফেব্রুয়ারি জেলাশাসকের অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভও করেন। এর পর ১৯ ফেব্রুয়ারি অযোধ্যা পাহাড়ের উপর ধানচাটানি গ্রামে একটি সভা হয় বলে খবর। এই ধানচাটানি গ্রাম এক সময় মাওবাদীদের গড় বলে পরিচিত ছিল। সেই সভায় কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক না রাখার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। এর পর ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে বিভিন্ন এলাকায় মাওবাদীদের নামাঙ্কিত পোস্টার দেখা যাচ্ছে। সেই পোস্টারে বিভিন্ন দাবির পাশাপাশি ভোট বয়কটের ডাকও দেওয়া হচ্ছে।
যদিও ইতিমধ্যেই পুরুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় টহলদারি চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। দিনের বেলায় বাহিনীর টলহদারির পর রাতে পড়ছে মাওবাদীদের নামে পোস্টার। জেলা পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, ‘‘পোস্টারের ঘটনায় কয়েকদিন আগে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অভিযান)- এর নেতৃত্বে আমরা একটি বিশেষ দল গঠন করেছি। তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক তথ্যও হাতে এসেছে’’