school

রং-মাপে প্রশ্নের মুখে স্কুলের পোশাক

প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, অতীতে স্কুলগুলিতে পোশাক সরবরাহ করত স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। বাজার থেকে কাপড় কিনে সেলাই করে বা সরাসরি দোকান থেকে পোশাক কিনে স্কুলে সরবরাহ করা হত।

Advertisement

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল

বাঁকুড়া ও রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২২ ০৮:৩১
Share:

নতুন ও পুরনো ইউনিফর্মে স্কুল পড়ুয়ারা। ছবি: সঙ্গীত নাগ

মাপে ছোট, তাই স্কুলের নতুন পোশাক পেয়েও পরতে পারছে না রঘুনাথপুর ১ ব্লকের শাঁকা হাই স্কুলের ছাত্র আবির মিশ্র। একই অবস্থা ওই ব্লকের শাঁকড়া হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী অঞ্জনি সরেনেরও। শুধু ওই ব্লক নয়, জেলার প্রায় সমস্ত স্কুলে ছবিটা কম-বেশি একই, উঠছে দাবি।

Advertisement

শিক্ষক ও অভিভাবকদের তরফে জানা যায়, চলতি শিক্ষাবর্ষে স্কুলে যে পোশাক দেওয়া হয়েছে, তাতে মূলত দু’টি সমস্যা দেখা যাচ্ছে। প্রথমত, পোশাকের কাপড়ের মান সন্তোষজনক নয়। দ্বিতীয়ত, বহু ক্ষেত্রে পোশাকের মাপ বেশ ছোট। পাশাপাশি, পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রদের হাফ প্যান্ট দেওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে। জেলার বহু স্কুলের শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, হাফ প্যান্ট পরে স্কুলে আসতে চাইছে না ছাত্রদের বড় অংশ। অভিভাবকদেরও একই মত। তার উপরে হাফ প্যান্টের মাপ এতই ছোট যে তা পরে পথে বেরোনো যাচ্ছে না, দাবি অনেকের।

প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, অতীতে স্কুলগুলিতে পোশাক সরবরাহ করত স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। বাজার থেকে কাপড় কিনে সেলাই করে বা সরাসরি দোকান থেকে পোশাক কিনে স্কুলে সরবরাহ করা হত। এ বারে রাজ্য থেকে জেলায় জেলায় কাপড় সরবরাহ করা হয়েছে। তা পাঠানো হয়েছে ব্লকগুলিতে। সংশ্লিষ্ট ব্লক প্রশাসন সেই কাপড় দিয়েছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে। তারা পোশাক বানিয়ে সরবরাহ করেছে স্কুলে।

Advertisement

তবে পোশাক ঘিরে উঠছে অনেক প্রশ্ন। কাপড়ের খারাপ মান নিয়ে ইতিমধ্যে সরব হয়েছে বিজেপি। দলের জেলা সহ-সভাপতি অসীম চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, বহু ব্লকে যে পোশাক সরবরাহ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত নিম্ন মানের। পড়ুয়ারা তা পরতে চাইছে না। তাঁর দাবি, ”বিষয়টি জেলা প্রশাসন থেকে শিক্ষা দফতর, সর্বত্র জানিয়েছি। তদন্ত হোক।”

পোশাক নিয়ে অভিভাবক ও পড়ুয়াদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে, দাবি বহু স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের। ‘অ্যাডভান্স সোসাইটি ফর হেডমাস্টার অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস’ সংগঠনের পুরুলিয়ার সম্পাদক অভিষেক মিশ্র বলেন, ”পোশাক নিয়ে নানা সমস্যার কথা স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে শোনা যাচ্ছে। অথচ এ নিয়ে আমাদের কিছুই করার নেই। তবে বিষয়টি অভিভাবক ও ছাত্রদের বোঝানো যাচ্ছে না।” পোশাক-সংক্রান্ত সমস্যা ও জটিলতা কাটাতে পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছে সংগঠনটি।

এর সঙ্গে, এ বছরই পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পোশাকের রং নীল-সাদা করে দেওয়ায় বহু স্কুলে দু’রঙের পোশাকে দেখা যাচ্ছে পড়ুয়াদের। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত নীল-সাদা আর নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা পুরনো পোশাকে স্কুলে আসছে। শিক্ষকদের একাংশের ক্ষোভ, পোশাকের সঙ্গে স্কুলের পরিচয়, ঐতিহ্য জড়িয়ে থাকে। এখন সেটাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সূত্রের খবর, অনেক স্কুলেই নীল-সাদার বদলে পুরনো পোশাক পরে স্কুলে আসছে পড়ুয়ারা।

অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) প্রণবকুমার ঘোষ বলেন, ”স্কুলের পোশাকের কাপড় রাজ্য থেকেই সরবরাহ করা হয়েছে। সেগুলি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্লকে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছে জেলা প্রশাসন। তবে পোশাকের মাপ ঠিক না হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement