প্রতীকী ছবি।
নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় গিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন এক বধূ। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থানা এলাকার ওই ঘটনায় অভিযোগের সাত মাসের মধ্যে যাবজ্জীবন সাজা হল নির্যাতিতার বাবার। বুধবার এই রায় দেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর আদালতের জেলা অতিরিক্ত দায়রা বিচারক আতাউর রহমান।
বিষ্ণুপুর আদালতের সরকারি কৌঁসুলি মনোদীপ্ত চৌধুরী বলেন, ‘‘অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে পুলিশ চার্জশিট পেশ করেছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে বিচারপর্বও শেষ করে সাজা দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি জানান, আদালত অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে। সেই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ছ’মাস কারাদণ্ড দিয়েছে। ওই ৫০ হাজারের মধ্যে ৪০ হাজার নির্যাতিতাকে দিতে বলা হয়েছে।
পুলিশ ও সরকার পক্ষের আইনজীবীর কাছ থেকে জানা গিয়েছে, বছর এগারোর ওই নাবালিকার বাবা গাড়িচালক। মা লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। মেয়েটির মায়ের অভিযোগ, দুপুরে খাওয়াদাওয়া করে তিনি বেরিয়েছিলেন। বাড়িতে শুয়েছিলেন তাঁর স্বামী। পরে তিনি বাড়ি ফিরে মেয়েকে অসুস্থ দেখে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সেই সময়ে স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর কাছে মেয়ে অভিযোগ করে, দুপুরে স্কুল থেকে ফেরার পরে বাবা তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। শুধু সে দিনই নয়, আগেও কয়েকবার যৌন হেনস্থা করা হয়েছে বলে মেয়েটি তার মায়ের কাছে অভিযোগ করে। এর পরেই বধূটি মেয়েকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি ফিরে স্বামীর কাছে প্রতিবাদ জানান। কিন্তু উল্টে স্বামী তাঁকে মারধর করে বলে অভিযোগ। তারপরেই তিনি মেয়েকে নিয়ে বিষ্ণুপুর থানায় গিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
গত বছর ২৩ জুলাই অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই পুলিশ ওই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করে পুলিশ। তদন্ত করে পুলিশ ২০ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলার চার্জশিট পেশ করে। আর্থিক অনটন থাকায় আদালত থেকেই অভিযুক্তের আইনজীবী ঠিক করা হয়। আসামির আইনজীবী গুরুপদ ভট্টাচার্য বলেন, “বিভিন্ন জনের সাক্ষী নিয়ে এবং নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দির ভিত্তিতে বিচারক সাজা দিয়েছেন। তবে আসামি এখনও দাবি করেন, তিনি নির্দোষ। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।’’