সমাজ মাধ্যমে ছড়াল তৃণমূলের ‘মিম’। নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে গত কয়েক বছরে পুরুলিয়ায় রামনবমীর শোভাযাত্রায় একচেটিয়া ভাবে বিজেপি নেতাদের ভিড়ই দেখা যেত। তবে এ বার লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে রামনবমীর শোভাযাত্রাকে ঘিরে জনসংযোগের সুযোগ হাতছাড়া করল না শাসক-বিরোধী কোনও পক্ষই।
পুরুলিয়া শহরে শোভাযাত্রায় পা মেলালেন বিদায়ী বিজেপি সাংসদ তথা প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। গোশালা মোড়ে শোভাযাত্রার শুরু থেকে প্রায় পুরো পথ হাঁটেন জ্যোতির্ময়। অন্য দিকে, পোস্ট অফিস মোড়ে রাস্তার একপাশে বসে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন তৃণমূল প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতো। সেখানেই উল্টো দিকে জলসত্র খুলে তৃণমূল কর্মীরা শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের ঠান্ডা জল খাওয়ালেন। নিতুড়িয়াতে আবার দেখা গেল শোভাযাত্রায় যোগ দেওয়া লোকজনকে মিষ্টি ও ঠান্ডা শরবত খাইয়ে আপ্যায়ন করলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অমরচন্দ্র মাজি।
বছর কয়েক আগে পুরুলিয়া শহরে রামনবমীর শোভাযাত্রায় রীতিমতো গেরুয়া পাগড়ি বেঁধে শামিল হতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এ বারে তৃণমূলের নেতারা শোভাযাত্রায় শামিল না হলেও রামনবমীর অনুষ্ঠানে তাঁরাও শামিল আছেন সেই বার্তা দিয়েছেন। এ দিন শান্তিরামের সঙ্গে শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত ছিলেন বাঘমুণ্ডির বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো, পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি-সহ পুর-প্রতিনিধিরা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে প্রায় সবার কাঁধে ছিল গেরুয়া উত্তরীয়। তবে সেক্ষেত্রে অবশ্য ব্যতিক্রম ছিলেন শান্তিরাম।
পুরুলিয়া শহর তৃণমূলের তরফে সমাজ মাধ্যমে রামনবমীর শুভেচ্ছা বার্তা দেওয়া মিম ছড়িয়েছে। সেখানে রামচন্দ্র ও হনুমানের ছবি ছাপা গেরুয়া ব্যাকগ্রাউন্ডের উপরে ‘আমি এক জন রাম ভক্ত...’ লেখা রয়েছে। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে তৃণমূল প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতো, জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার ছবি ছাপা তাতে।
রেল শহর আদ্রায় রামমন্দির কমিটির উদ্যোগে শোভাযাত্রার পুরোভাগে ছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির দুই কর্মাধ্যক্ষ অখিলেশ যাদব এবং ডি মনোজ। ছিলেন তৃণমূলের আদ্রা শহর সভাপতি রাজা চৌবেও। বিজেপির স্থানীয় কিছু নেতা-কর্মীকেও সেখানে দেখা গিয়েছে।
সাঁতুড়ি ব্লক তৃণমূল সভাপতি রামপ্রসাদ চক্রবর্তী, নিতুড়িয়ার ব্লক সভাপতি অমরচন্দ্র মাজি নানা জায়গায় রামচন্দ্রের পুজোয় যোগ দেন। পুজো দেন জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়াও।
রঘুনাথপুর শহরের বিকালে বড় আকারে শোভাযাত্রা হয়েছে। সেখানে পুরো ভাগে ছিলেন বিজেপির বিধায়ক বিবেকানন্দ বাউরি। পরে যোগ দেন তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক হাজারি বাউরি, আইএনটিটিইউসির রঘুনাথপুর শহর সভাপতি সৌর্য চক্রবর্তী।কাশীপুরের শোভাযাত্রায় বিজেপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের দেখা গিয়েছে।
বুধবার পুরুলিয়া ২ ব্লকের চয়নপুর এলাকায় রামনবমী উপলক্ষে একটি কলসযাত্রা বেরোয়। সেখানে কয়েকজন যুবককে তলোয়ার হাতে দেখা গিয়েছে একটি ভিডিয়োতে (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার)। এ বিষয়ে অবশ্য ওই শোভাযাত্রার উদ্যোক্তাদের কেউ মন্তব্য
করতে চাননি।