নিজস্ব চিত্র।
সরকারি হোমে নাবালিকা আবাসিকদের ওপর যৌন নির্যাতনের ঘটনায় সাত দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করা হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন। হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপি নেত্রী তথা সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, গত ২৩ ডিসেম্বর পুরুলিয়া জেলা আদালতের বিচারকের কাছে অভিযোগ আসে, পুরুলিয়ার আনন্দ মঠ হোমে কিছু দিন ধরে বিভিন্ন মামলায় জড়িত বিচারাধীন নাবালিকা আবাসিকদের ওপর যৌন নির্যাতন চলছে। অভিযোগ ওঠে, হোমের সুপারের বিরুদ্ধে। এই গুরুতর অভিযোগ পেয়ে এক বিচারক হোম পরিদর্শন করেন এবং আবাসিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তার পরই এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয় জেলা পুলিশ সুপার ও জেলাশাসককে।
এই নির্দেশের পর গত ২৫ ডিসেম্বর হোমের ওই আবাসিকদের বয়ান অনুযায়ী পুরুলিয়া সদর মহিলা থানার পুলিশ হোমের সুপার, জনৈক শিশির কাকু ও এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করে। হোমের সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেল তদন্তকারী আধিকারিকরা। ঘটনার পর বেশ কয়েক দিন কেটে গেলেও অভিযুক্তরা ধরা না পড়ায় রবিবার প্রতিবাদে পথে নামে বিজেপি। এদিন দুপুরে পুরুলিয়া শহরের রেল স্টেশন থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়। মিছিলে পা মেলান হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো এবং কংগ্রেস থেকে সদ্য বিজেপি-তে যোগ দেওয়া পুরুলিয়ার বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে। এই মিছিল চক বাজার হয়ে ট্যাক্সি স্ট্যান্ড পর্যন্ত যায়। সেখানে একটি প্রতিবাদ সভা হয়।
এর পরই হোমের উদ্দেশে রওনা দেন বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু তাঁদের কনভয় আটকে দেয় পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের তুমুল বচসা বাধে। এর পরেই পুলিশের একের পর এক গার্ড রেলে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে হোমের প্রধান দরজার সামনে পৌঁছন লকেটরা। অভিযোগ, সেখানেও আটকে দেওয়া হয় তাঁদের। তার পরই মূল গেটের সামনেই মাটিতে বসে পড়েন বিজেপি নেতৃত্ব। লকেট বলেন, “গোটা ঘটনাটি আমি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে জানাব। আমরা মহিলারা ওই নির্যাতিতাদের সঙ্গে দেখা করে ঘটনার কথা জানতে এসেছিলাম, কিন্তু পুলিশ আমাদের ঢুকতে দেয়নি। পুলিশ হোমের যে সুপারকে আমাদের সামনে কথা বলার জন্য এনেছিল, তিনি মাত্র তিন আগে দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি কিছুই জানেননা বলে আমাদের জানান।” লকেট আরও বলেন, “৭ দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের নামব।”
অন্য দিকে, পুরুলিয়া পুলিশ সুপার এস সেলভা মুরুগন বলেন, “এই ঘটনার তদন্ত মহামান্য হাইকোর্টের জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের তত্ত্বাবধনে চলছে। ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি ছাড়া কাউকে এই হোমের ভিতরে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া যাবে না।”