কোপাই বাঁচাতে অবস্থান বিক্ষোভ। রবিবার শান্তিনিকেতনে। নিজস্ব চিত্র।
ঐতিহ্যক্ষেত্রের মধ্যে পড়ে না। কিন্তু খোয়াই আর কোপাই ছাড়া শান্তিনিকেতন সম্পূর্ণ হয় না। অভিযোগ, সেই কোপাই ক্রমাগত দখল হয়ে চলেছে। সেই নদীকে বাঁচাতে রবিবার পথে নামলেন ‘শান্তিনিকেতন খোয়াই সাহিত্য সংস্কৃতি সমিতি’ ও নদীপ্রেমী মানুষজনেরা। এ দিন কোপাইয়ের পাড়ে অবস্থান-বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে শুরু হল তাঁদের প্রতিবাদ। একই সঙ্গে এ দিন কোপাইকে বাঁচাতে সই সংগ্রহের কাজও শুরু করলেন তাঁরা। যদিও বিষয়টি দ্রুত খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
লাভপুরের হাঁসুলি বাঁধ, কঙ্কালীতলার শ্মশানের পিছন দিয়ে তির তির করে বয়ে চলেছে কোপাই। কোপাইয়ের রূপ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখায় উঠে এসেছে। অভিযোগ, সেই নদী এখন মজে যাওয়ার পথে। শান্তিনিকেতনবাসীর একাংশের অভিযোগ, যথেচ্ছ কংক্রিটের নির্মাণ আর ইটভাটার দাপটে হারিয়ে গিয়েছে কোপাইয়ের সৌন্দর্য। এ বার শান্তিনিকেতনের গোয়ালপাড়া ব্রিজ সংলগ্ন কোপাই নদীর পাড়ে আবারও নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই নির্মাণ অবিলম্বে বন্ধ, কোপাই নদীকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে এ দিন নদীর পাড়েই প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ করলেন নদীপ্রেমী মানুষেরা।
এ দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন বিশ্বভারতীর শিক্ষক, কর্মী, প্রাক্তন শিক্ষক থেকে শুরু করে অনেকেই। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে কোপাই নদীর পাড়ে অবৈধ নির্মাণ কাজ বন্ধের পাশাপাশি নদীকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।
‘শান্তিনিকেতন খোয়াই সাহিত্য সংস্কৃতি সমিতি’র সম্পাদক তথা পাঠভবনে শিক্ষক কিশোর ভট্টাচার্য বলেন, “রবীন্দ্রনাথের ভালবাসার, স্বপ্নের নদী কোপাই। সেই নদী লুট করে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। সে জন্য আমরা রাজ্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। আমরা চাই নদী স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুক।” নদী বিশেষজ্ঞ মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের প্রতিবাদের স্লোগান হল, ‘আমাদের প্রতিবেশিনী কোপাই তাকে বাঁচাতে আমরা সবাই।’ আমরা আজ যদি প্রতিবাদ না করি, তা হলে দেখা যাবে এক দিন কোপাই নদীর উপরেও নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।”
বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই ভূমি দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য। দ্রুত জেলা প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে আমি পরিদর্শন করব।’’