বাবাকে খুনের ঘটনায় ছেলের সাক্ষ্যে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল মায়ের। সাজা হয়েছে মায়ের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত প্রেমিকেরও।
শুক্রবার রামপুরহাটের দ্রুত নিষ্পত্তি সম্পন্ন আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক অনিলকুমার প্রসাদ ওই সাজা শোনান। সাজাপ্রাপ্তেরা হলেন চায়না লেট এবং অযতন লেট। দু’জনেরই বাড়ি মাড়গ্রাম থানার কালুহা গ্রামে। সরকারি আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কালুহা গ্রামের পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা শিশির লেটের স্ত্রী, দুই সন্তানের মা চায়না লেটের সঙ্গে গ্রামেরই পূর্বপাড়ার বাসিন্দা অযতন লেটের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল।
তার জেরেই খুন হতে হয় শিশিরবাবুকে। তিনি আরও জানান, ওই সম্পর্ক নিয়ে প্রায়ই লেট-দম্পতির ঝামেলা হত। অযতন ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর রাতে শিশিরবাবুর বাড়িতে আসে। স্ত্রী-র সঙ্গে অযতনের মেলামেশা দেখতে পেয়ে শিশিরবাবু চীৎকার করলে অযতন শিশিরবাবুর গলা ও মুখ হাত দিয়ে টিপে ধরে। পরে জানা যায় স্বামীকে মারতে অযতনকে সাহায্য করে চায়নাও। ঘটনাস্থলেই শিশির লেট মারা যান।
সরকারি আইনজীবী জানান, শিশিরবাবুর বড় ছেলে শুভ ঘটনার দিন বাড়িতে ছিলেন না। ছোট ছেলে মহাদেব মায়ের সঙ্গে ঘুমোচ্ছিল। বাবার চীৎকারে মহাদেবের ঘুম ভেঙে যায়। সে পুরো ঘটনার সাক্ষী ছিল। তার সাক্ষ্যেই মা এবং মায়ের প্রেমিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল। রায়ে খুশি মহাদেব। তাঁর কথায়, ‘‘মন থেকে চরম শাস্তি চেয়েছিলাম। আজ বাবার আত্মা শান্তি পেল।’’
সরকারি আইনজীবী জানান, ঘটনার পরের দিন শিশিরবাবুর দাদা অসীম লেট মাড়গ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। দিন সাতেকের মধ্যে গ্রেফতার করা হয় চায়না ও অযতনকে। সাজা ঘোষণা ইস্তক দু’জনেই জেল হেফাজতে ছিল। শুক্রবার বিচারক ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় দু’জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। উভয়েরই ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা হয়েছে।