দোলের আগে বিক্রি হচ্ছে আবির। তালড্যাংরায়। নিজস্ব চিত্র।
রাসায়নিক আবিরের ক্ষতিকারক দিক নিয়ে সচেতনতা বাড়ার পরে, এখন অনেকেই ভেষজ আবিরের দিকে ঝুঁকছেন। দাম তুলনায় বেশি হলেও, দোকানে-দোকানে খোঁজ বেশি পড়েছে ভেষজ আবিরেরই, জানাচ্ছেন বাঁকুড়ার বিভিন্ন প্রান্তের আবির বিক্রেতাদের। জেলার বিভিন্ন বসন্তোৎসব কমিটিগুলির তরফেও ভেষজ আবির ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে চাহিদার তুলনায় ভেষজ আবিরের জোগান কম, মত ক্রেতা-বিক্রেতা, দু’পক্ষেরই।
বাঁকুড়া শহরের দোকানগুলিতে বৃহস্পতিবার ভেষজ আবিরের চাহিদা ছিল তুঙ্গে। শহরের এক বাসিন্দা গোরাচাঁদ কান্ত বলেন, “মানুষ এখন বুঝেছেন যে, রাসায়নিক মেশানো আবির স্বাস্থ্য ও ত্বকের ক্ষতি করে। সচেতনতাও তাই বেড়েছে। দোকানে দেখলাম, আমার মতো অনেকেই ভেষজ আবিরের খোঁজ করছেন। তবে শহরে ভেষজ আবির সর্বত্র মিলছে না। আবিরের জোগান আরও বাড়ানো উচিত।” আর এক বাসিন্দা মিলন পাল জানান, বছর দু’য়েক আগে আবির থেকে ত্বকে সমস্যা হয়েছিল। ডাক্তারও দেখাতে হয়। তাই ভেষজ আবির ছাড়া, অন্য কিছু ব্যবহার করেন না।
তবে তেমন আবিরের অভাব রয়েছে প্রায় সর্বত্রই। বিষ্ণুপুরের পঙ্কজ দাস, বুবাই ভট্টাচার্যেরা বলেন, “ভেষজ আবিরই ব্যবহার করতে চাই। কিন্তু পাব কোথায়? দোকানদারকে বললে বলছেন, জোগান কম।” ভেষজ আবিরের চাহিদা বেড়েছে দক্ষিণ বাঁকুড়ার বিভিন্ন এলাকাতেও। ইঁদপুরের এক দশকর্মার দোকানের মালিক শৈলেন তন্তুবায় জানান, মানুষ সচেতন হয়েছেন। ভেষজ আবিরও তাই বেশি বিক্রি হচ্ছে। ইঁদপুর সরোজিনী বালিকা বিদ্যালয় ও ভেদুয়াশোল গার্লস হাইস্কুলে এ দিন বসন্ত উৎসব ছিল। দুই স্কুল কর্তৃপক্ষই জানান, পড়ুয়া থেকে শিক্ষিকা, সকলে ভেষজ আবির ব্যবহার করেছেন। তালড্যাংরার পাঁচমুড়া বাজারেও দেখা গেল রাসায়নিক আবিরের চেয়ে ভেষজ আবির বিকোচ্ছে বেশি।
সাধারণ রাসায়নিক আবিরের দাম যেখানে কেজি প্রতি ৫০ টাকা, সেখানে ভেষজ আবির বিকোচ্ছে প্রায় তিন গুণ দামে। তবুও ভেষজ আবিরের চাহিদা বেশি জানিয়ে বড়জোড়ার এক ব্যবসায়ী জলধর পাল বলেন, “গত বছর থেকে ভেষজ আবিরের চাহিদা বেড়েছে। তাই এ বার শুধু ভেষজ আবিরই তুলেছি। তবে চাহিদা পুরোপুরি মেটানো যাবে বলে মনে হয় না।” তবে এ ভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনে ভেষজ আবির সহজলভ্য হবে আর দামও কমবে, আশা তাঁর।