পুরপ্রধানের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করায় এক তৃণমূল কাউন্সিলরকে দল থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করলেন অন্য কাউন্সিলররা। রবিবার বৈঠক ডেকে রেজলিউশন করে ওই সুপারিশ করা হয়েছে দলের জেলা সভাপতির কাছে। ঘটনাটি দুবরাজপুর পুরসভার।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার পুরসভার মধ্যে পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে দুই ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলছিলেন। সেই সময় পুরসভায় এসে পৌঁছন তৃণমূল কাউন্সিলর শেখ নাজিরউদ্দিন। কেন ঠিকাদাররা পুরসভা দখল করে এ ভাবে মজলিশ করবে, এই প্রসঙ্গ তুলে পুরপ্রধানের সঙ্গে বচসায় শুরু হয় নাজিরের। অভিযোগ, তখনই নাজিরউদ্দিন পুরপ্রধান পীযূষবাবুর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। নথি ছুড়ে ফেলে দেন। উল্টে দেন চেয়ার। বহিষ্কার নিয়ে রবিবারের ওই বৈঠকে ১৬ জনের মধ্যে ১৪ জন কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। এ ঘটনার কথা মেনেছেন পুরপ্রধান পীযূষবাবু ও উপপ্রধান মির্জা সৌকত আলি। পীযূষবাবুর কথায়, ‘‘সে দিনের ঘটনায় আমি মর্মাহত।’’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরপ্রধানের সঙ্গে অতীতেও একাধিকবার নাজিরউদ্দিনের মতের অমিল হয়েছে। গত পুরভোটের আগে পুরপ্রধান সহ এক ঝাঁক কংগ্রেস কাউন্সিলর দলত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেও কংগ্রেসেই থেকে গিয়েছিলেন নাজিরউদ্দিন। শুধু তাই নয়, ১৬ আসনের মধ্যে ৯টি আসন পেয়ে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসাবে কংগ্রেসের প্রাপ্ত আসন ছিল চারটি। দুটি বিজেপি ও সিপিএমের এক কাউন্সিলরকে নিয়ে হয় মোট সাত আসনের বিরোধী বেঞ্চ। পুরসভার অন্দরের খবর, তখনও নানা বিষয়ে পুরপ্রধানের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন নাজিরউদ্দিন। পরে একে একে বিরোধী কাউন্সিলররা দলবদলে তৃণমূলে যোগ দিলে নাজিরউদ্দিনও বছর দুই আগে তৃণমূলে যোগ দেন। তারপর থেকে পুরপ্রধানের সঙ্গে তাঁর সদ্ভাব ছিল বলেই জানতেন অনেকে।
এঁদেরই কেউ কেউ বলছেন, ‘‘ঠিকাদার তো কোনও বিষয় নয়। এর থেকে অনেক বড় সঙ্কটে পুরপ্রধানের পাশে থাকতে দেখা গিয়েছে ওই কাউন্সিলরকে।’’ নাজিরউদ্দিন বলছেন, ‘‘এক জন কাউন্সিলরের সঙ্গে পুরপ্রধানের মতের অমিল হতেই পারে। তবে হঠাৎ মাথা গরম করে ফেলাটা ভুল হয়ে গিয়েছে।’’
এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া মেলেনি জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের। কী সিদ্ধান্ত নেন তিনি, সেই দিকেই চেয়ে পুরসভা।