ফাইল চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’-য় ‘গুরুতর’ অভিযোগের তদন্তে জেলায় আসবে সিবিআইএর প্রতিনিধি দল। এটা ধরে নিয়েই গুটি সাজাচ্ছে বীরভূম বিজেপি। দল সূত্রের খবর, শুধু ‘হিংসার শিকার’ দলের কর্মীদের আইনি সহায়তা দেওয়াই নয়, সিবিআইয়ের প্রতিনিধিরা এলে তাঁদের সামনে ‘হিংসা’র প্রকৃত তথ্য তুলে ধরতে বিশেষ ভূমিকাও নেবেন আইনজীবীরা ।
ঘটনার সত্যতা মেনে নিয়েছেন বিজেপি-র জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা। তিনি বলেন, ‘‘ভোট-পরবর্তী বহু অভিযোগ উঠেছে। তার মধ্যে খুন , ধর্ষণ ও ধর্ষণের চেষ্টার মতো অন্তত ১৩টি মামলা রয়েছে, যেগুলি সিবিআই খতিয়ে দেখতে পারে। তখন শুধু জেলার বাছাই আইনজীবীরাই নন, সাহায্য করবেন কলকাতা হাই কোর্টের কিছু বিশিষ্ট আইনজীবীও। ইতিমধ্যেই তাঁরা জেলার আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।’’
প্রসঙ্গত, ‘ভোট-পরবর্তী হিংসা’ নিয়ে হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিদল বিভিন্ন জেলায় গিয়ে তদন্ত করে জুলাইয়েই আদালতে রিপোর্ট জমা দেয়। রিপোর্টে দাবি করা হয়, শুধু বীরভূমেই ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’-র তিনশোরও বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। জেলা পুলিশের তরফে বলা হয়েছিল, অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তার পরও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ঘরছাড়া করা, খুন, মহিলাদের উপর অত্যাচার, বাড়ি লুট, দোকান লুঠ করা জ্বালিয়ে দেওয়া, মারধর-সহ নানা অভিযোগ ছিল।
কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে সম্প্রতি জোড়া তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। খুন, ধর্ষণ ও ধর্ষণের চেষ্টার মতো অভিযোগের ক্ষেত্রে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হয়। ইতিমধ্যেই মামলার তদন্তের জন্য দল গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। চারটি দলে বিভক্ত হয়ে সিবিআইয়ের প্রতিনিধি দল বিভিন্ন জেলায় আসবেন বলে খবর। মঙ্গলবারই সিবিআই বীরভূমে আসতে পারে খবর রটলেও সেটা সত্যি হয়নি।
তবে, সিবিআইয়ের প্রতিনিধি যে কোনও দিন আসবে ধরে নিয়েই প্রস্তুতি নিচ্ছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে, দলের লিগ্যাল সেলের পক্ষ থেকে জেলার তিনটি মহকুমায় ‘ভোট-পরবর্তী হিংসার শিকার’ দলীয় কর্মীদের আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য বেশ কয়েক জন আইনজীবীর উপরে দায়িত্ব রয়েছে। কলকাতার একাধিক আইনজীবীও এতে সাহায্য করেছেন।
বিজেপির হয়ে বিভিন্ন মামলা লড়ছেন সিউড়ির এক আইনজীবী। তিনি বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পুলিশের কাছে নথিবদ্ধ হয়নি, এমন গুরুতর অভিযোগও খতিয়ে দেখবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। আমরা তাতে সাহায্য করব।’’ তবে আইনজীবীরা এটাও জানাচ্ছেন, শুধু অভিযোগ তুললেই হবে না। যাঁরা হিংসার শিকার বলে অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গেও কথা বলবে সিবিআই।
জেলা পুলিশের এক কর্তা যদিও বলেন, ‘‘অভিযোগ এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা, তার রিপোর্টও রাজ্যকে জানানো হয়েছে।’’ অন্য দিকে, জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, অধিকাংশ অভিযোগই হয় ভিত্তিহীন নতুবা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সিবিআই তদন্তে এলে সেটাই দেখতে পাবে।