প্রতিবাদে একজোট। —দয়াল সেনগুপ্ত।
সামাজিক বনসৃজনে গাছ লাগিয়েছিল মোট ২২টি মহিলা স্বনির্ভর দল। অথচ সেই বনভূমি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পেল মাত্র একটি দল।
কেন বাকি ২১টি দলকে বঞ্চিত করা হল, তার প্রতিবাদে বিডিও-র শরণাপন্ন হলেন বঞ্চিত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর জনা পঞ্চাশেক মহিলা সদস্য। সোমবার বিকালে দুবরাজপুরের ব্লক অফিসের ঘটনা। বঞ্চিত মহিলা স্বনির্ভর দলের সদস্যদের দাবি, ‘‘প্রতিকার চাই। চাই নায্য অধিকার।’’ বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন দুবরাজপুরের বিডিও বনমালি রায়।
প্রশাসন সূত্রের খবর, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে গত জুলাই-আগস্ট মাসে দুবরাজপুরের বালিজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের দাঁতিন দিঘির চারপাশে ১০০ বিঘা জমিতে সামজিক বনসৃজন হয়েছিল। সামাজিক বনসৃজনের (মূলত ফলের বাগান) জন্য মোট ব্যয় ১১ লক্ষ৬৮ হাজার ৬৪০টাকা। কর্মদিবস সৃষ্টি হয়েছিল ৫৪২২ দিন। যোগ দিয়েছিল পঞ্চায়েত ঘেঁষা মঙ্গলপুর গ্রামের মোট ২২টি স্বনির্ভর দলের মহিলা সদস্যেরা। কিন্তু মাসখানেক আগে স্বনির্ভর দলগুলির সদস্যেরা জানতে পারেন, কাজে থাকা ২১টি দলকে বঞ্চিত করে স্থানীয় বালিজুড়ি পঞ্চায়েত ফলবাগানের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পেয়েছে ‘আমরা স্বাধীন’ নামে একটি মাত্র মহিলা স্বনির্ভর দল। বিতর্কের সূত্রপাত সেখান থেকেই। তবে এর পরেও জল গড়িয়েছে।
‘জয়গোপাল’ স্বনির্ভর দলের মিতালী ধীবর, ‘করুণাময়ী’ দলের পদ্মা মণ্ডল, ‘জ্যোতি’ দলের কণিকা ধীবর, ‘বাবা লোকনাথ’ দলের সাবিত্রী ভাণ্ডারীদের অভিযোগ, ‘‘আমরা রোদে পুড়ে জলে ভিজে সবাই মিলে ওই বাগান তৈরি করেছি। তখন কেন একটি মাত্র দলকে দায়িত্ব দেবে পঞ্চায়েত? বিষয়টি জানার পরে প্রধানের কাছে দরবার করি। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।’’ শুধু তা-ই নয়, প্রতিবাদ করায় গ্রামেরই কিছু লোকের কাছে ওই মহিলাদের হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ। মিতালিদের দাবি, ‘‘গত বৃহস্পতিবারই বিডিও-কে জানাতে এসেছিলাম। কিন্তু তিনি না থাকায় জানানো যায়নি। ফেরার সময়ে আমাদের পথ আটকে হেনস্থা করে ‘আমরা স্বাধীন’ দলের সমর্থনে থাকা কিছু লোক। পুলিশকে জানাই। তখনকার মতো সমস্যা মেটে। কিন্তু কেন আমরা নিজেদের অধিকার পাব না? তাই আবার বিডিও-র কাছে জানতে এলাম।’’
দায়িত্বে কেন একটি দল? বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান মৌসুমী বাগদির দাবি, ‘‘গাছ লাগিয়েছিল ব্লক। রক্ষণাবেক্ষণে একটি দলের নাম চাওয়া হয়েছিল। তাই একটি দলকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’ দুবরাজপুরে বিডিও যদিও প্রধানের এই দাবি মানতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘কী কারণে এমন সমস্যা হয়েছে, সেটা দেখে যত দ্রুত সম্ভব একটা স্থায়ী সমাধান বের করা হবে।’’