Nandan Mela Shantiniketan

রাত পোহালেই নন্দন মেলা, বাঁশ-খড়-দড়িতে সাজছে প্রাঙ্গণ

কলাভবন সূত্রে জানা যায়, যে বছর মেলা শুরু হয়েছিল, তার ঠিক আগের বছর এক ছাত্র কলাভবন চত্বরে দুর্ঘটনায় জখম হন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:২৯
Share:

বিশ্বভারতীর কলাভবনে নন্দন মেলার প্রস্তুতি পড়ুয়াদের। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।

প্রতিবারের মতো এ বারও ১ ডিসেম্বর থেকে কলাভবনে শুরু হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী নন্দন মেলা। তারই এখন শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা তুঙ্গে। সদ্য শান্তিনিকেতনকে বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্র বা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। ফলে, সেই দিক মাথায় রেখে শান্তিনিকেতনের প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নানাবিধ উপকরণের সাহায্যে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে কলাভবন প্রাঙ্গণ। ১ ও ২ ডিসেম্বর হবে এই শিল্প মেলা।

Advertisement

প্রসঙ্গত, ৩ ডিসেম্বর শিল্পাচার্য নন্দলাল বসুর জন্মদিন। ওই দিনটিকে স্মরণীয় করে তুলতে প্রতি বছর কলাভবন কর্তৃপক্ষ পয়লা ডিসেম্বর থেকে দু’দিনের জন্য এই শিল্পমেলার আয়োজন করে থাকেন। এ বারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। কলাভবনের পড়ুয়াদের সারা বছর ধরে নিজেদের হাতে তৈরি করা শিল্প সামগ্রী প্রদর্শিত ও বিক্রি হয় এই মেলায়। ছাত্র-ছাত্রীদের আঁকা, গ্রাফিক নকশা, মাটির গয়না, ডোকরা, সেরামিক্স, মাটির বাসনের পসরা থাকে মেলায়। কলাভবনের বর্তমান পড়ুয়া থেকে প্রাক্তনীরা মিলে এই মেলার আয়োজন করেন। মেলা শেষে ৩ তারিখ কলাভবনে নন্দলাল বসুর জন্মদিন পালন করা হবে।

কলাভবন সূত্রে জানা যায়, যে বছর মেলা শুরু হয়েছিল, তার ঠিক আগের বছর এক ছাত্র কলাভবন চত্বরে দুর্ঘটনায় জখম হন। সেই সময় চিকিৎসার খরচ জোগাতে বেশ খানিকটা সমস্যা হয়েছিল। তবে, ছাত্রছাত্রী, অধ্যাপক সকলে মিলে চাঁদা করে সেই ছাত্রটিকে সুস্থ করে তোলেন। এর পরে ছাঠিক হয়, কলাভবনের ছাত্রছাত্রীরা সারা বছর যে সমস্ত জিনিস বানাবেন, সেগুলি একটি মেলা হবে। সেই মেলা থেকে যা আয় হবে, তা কলাভবনের একটি তহবিলে জমা করা হবে। ওই তহবিলটি এখানকার দুঃস্থ পড়ুয়াদের সাহায্যের জন্য ব্যবহৃত হবে। সেই বছর থেকেই তৈরি করা হয় ‘কলাভবনের স্টুডেন্টস এড অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার ফান্ড’। নন্দনমেলায় জিনিস বিক্রি করে যা আয় হয়, তা এই তহবিলে জমা পড়ে।

Advertisement

কলাভবন প্রাঙ্গণে এখন সাজো সাজো রব। বর্তমান ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে প্রাক্তনীরা রাতদিন এক করে সাজিয়ে তুলছেন মেলা প্রাঙ্গণ। কলাভবনের ৬টি বিভাগের তরফে আলাদা আলাদা করে মেলায় স্টল রাখা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি প্রদর্শনীর পাশাপাশি বিদেশি পড়ুয়াদের হাতের তৈরি বিদেশি খাবারের স্টলও থাকছে এ বার মেলায়। বুধবার সেখানে গিয়ে দেখা গেল, বাঁশ, খড়, দড়ি, চট, পিচবোর্ড প্রভৃতি জিনিস দিয়ে মেলা প্রাঙ্গণকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের শিল্পকর্মের পসরা তো থাকবেই। সঙ্গে ছৌ নাচ-সহ বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও রাখা হচ্ছে।

প্রতি বছর এই মেলা দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে অনেকেই আসেন। অনেকে নন্দন মেলাকে প্রাক্তনীদের মিলন মেলাও বলে থাকেন। কলাভবনের পড়ুয়া যুথিকা ঢালি, মনোজ নাথ বলেন, “অধ্যাপক থেকে শুরু করে প্রাক্তনী, সকলের সহযোগিতায় এ বারও মেলার আয়োজন করতে পেরে আমরা খুশি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement