ভাষা দিবসে শহিদ স্মরণ বিশ্বভারতীতে

বুধবার সকাল ৮ টায় বিশ্বভারতীর বিদেশি ছাত্র সহায়তা কেন্দ্র ও ইন্দিরা গাঁধী কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে উপাসনাগৃহ থেকে একটি প্রভাতফেরি বের হয়। লিপিকা প্রেক্ষাগৃহের সামনে এসে শহিদবেদীতে ফুল দেন ছাত্রছাত্রীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:২০
Share:

শ্রদ্ধা: আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসে শহিদ-স্মারকে সম্মান। বুধবার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র

দিনভর নানা অনুষ্ঠানে পালিত হল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বুধবার সকালে প্রভাতফেরির মাধ্যমে শুরু হয়েছিল ভাষা দিবস পালন। পরে হয় আলোচনাসভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিশ্বভারতী-সহ অন্য জায়গায় মর্যাদার সঙ্গে পালিত হয় আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস।

Advertisement

বাংলা ভাষার অবস্থান নিয়ে ঢাকায় ১৯৪৭ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে ভাষা বিক্ষোভ শুরু হয়। ১৯৪৮ সালের মার্চ মাসে সীমিত একটি আন্দোলন হলেও ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে ১৪৪ ধারা অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা রাজপথে বেরিয়ে এলে, পুলিশ গুলি চালায়। কয়েক জনের প্রাণহানি হয়। সেই আন্দোলনকে স্মরণে রাখতেই রাষ্ট্রসঙ্ঘ ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয়।

বুধবার সকাল ৮ টায় বিশ্বভারতীর বিদেশি ছাত্র সহায়তা কেন্দ্র ও ইন্দিরা গাঁধী কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে উপাসনাগৃহ থেকে একটি প্রভাতফেরি বের হয়। লিপিকা প্রেক্ষাগৃহের সামনে এসে শহিদবেদীতে ফুল দেন ছাত্রছাত্রীরা। বিশ্বভারতীতে পাঠরত বাংলাদেশের পড়ুয়ারা জানান, এই দিন তাঁদের দেশে পালিত হয় শহিদদের স্মরণ করে। ২১ ফেব্রুয়ারি আনন্দের নয় বরং শোকের দিন। বিকেলে প্রেক্ষাগৃহে আলোচনাসভায় যোগ দেন বাংলাদেশের অধ্যাপক রহমান চৌধুরী। পরে সেখানে জাপান, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, গ্রিস-সহ বিভিন্ন দেশের ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের দেশের অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।

Advertisement

অন্য দিকে বিশ্বভারতী ভাষাভবনের উদ্যোগে এ দিন ভাষা-বিদ্যা ভবনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। ভাষাভবনের অধীনে দেশি-বিদেশি সহ ১৮টি ভাষার বিভাগ রয়েছে। প্রতিটি বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা বুধবারের অনুষ্ঠানে সামিল হন। বাংলা সহ হিন্দি, ইংরেজি, ওড়িয়া, মরাঠী, সংস্কৃত, সাঁওতালি, তামিল, রাশিয়ান, উর্দু, পার্সিয়ান ভাষায় বক্তব্য, গান ও কবিতাপাঠ করেন তাঁরা। অংশ নিয়েছিলেন বিদেশের পড়ুয়ারাও।

প্রদীপ ভট্টাচার্যের পরিকল্পনায় পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পীসঙ্ঘের পরিচালনায় মাতৃভাষা দিবস পালিত হয় বোলপুরে। মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন বোলপুর সংবেদের শিল্পীরা। পরিচালনা করেন শ্যামশ্রী ভৌমিক। আমরা সবুজ, ইলোরা, কিনাঙ্ক, উত্তরণ, নৃত্যনিকেতন ও শ্রুতিসঙ্গমের পরিচালনায় বোলপুর গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহের গীতবিতান মঞ্চেও একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।

অন্য দিকে, ইলামবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের দর্শন শিক্ষক তাপস সরকারের উদ্যোগে এ বছরই প্রথম স্কুলটিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হল। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মিলিত প্রচেষ্টায় দিনটি পালন করা হয়। এ রকম একটি বিশেষ দিনে বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে খুশি পড়ুয়ারা। ইলামবাজার নবচক্রের অন্তর্গত পলসা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অন্য ভাবে পালিত হয় শহিদ স্মরণ। একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। নিয়ম ছিল, স্কুল শুরু হওয়ার সময় থেকে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পড়ুয়ারা শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলবে, অন্য কোনও ভাষা ব্যবহার করা যাবে না। সহশিক্ষক সুদ্ধদেব ঘোষ প্রতিযোগিতা পরিচালনা করেন। পাঁচ জন বিজয়ী হয়। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রশান্ত কবিরাজ জানান, নতুন প্রজন্মের কাছে মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরা ও নিজের মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা বাড়ানোর জন্যই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement