রফিক, বরকতদের স্মরণ জেলায়

প্রধান শিক্ষক দিলীপকুমার কুম্ভকার বলেন, ‘‘তিন দিন ধরে নাটকের কর্মশালা হয়েছে।’’ জঙ্গলের গাছ না কাটা, শুকনো পাতায় আগুন না ধরানো, প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করা, সাপে কামড়ালে কী করা উচিত তা নিয়ে নাটক— আমাদের গ্রাম।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:১২
Share:

ভাষা দিবসে: ডুঁড়কু শ্রী অরবিন্দ বিদ্যাপীঠ।নিজস্ব চিত্র

বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে বুধবার দুই জেলায় পালিত হল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এ দিন সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের উদ্যোগে নানা অনুষ্ঠান হয়। উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য দীপকরঞ্জন মণ্ডল, রেজিস্ট্রার নচিকেতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কলা বিভাগের ডিন সোনালি মুখোপাধ্যায়-সহ বিশিষ্টজনেরা। এ দিন বিভাগের পক্ষ থেকে চরৈবেতি নামে একটি দেওয়াল পত্রিকাও প্রকাশিত হয়। রেজিস্ট্রার জানান, বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে ‘রবিগাঁথা ৬৫’ নামে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পঁয়ষট্টিটি কবিতার সাঁওতালি অনুবাদ প্রকাশিত হয়। বাংলার বিভাগীয় প্রধান স্বপনকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘এই দিনটি কেন স্মরণীয় এবং ইংরেজি ভাষা কী ভাবে বাংলা ভাষাকেও সমৃদ্ধ করেছে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’’

Advertisement

এ দিন কুড়মি ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কালচারাল বোর্ডের উদ্যোগে পুরুলিয়া শহরের ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠান হয়। মানভূম সংস্কৃতি নিয়ে কর্মরত গুণীজনদের সংবর্ধনা জানানো হয়। প্রাক্তন অধ্যাপক চণ্ডীদাস মুখোপাধ্যায়, সুভাষ রায়, নবগোপাল রায়, ঠাকুরপ্রসাদ মুর্মু ও সনৎ মাহাতোকে সম্মান জানানো হয়। অনুষ্ঠানে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘নিজের মাতৃভাষা-সহ অন্য ভাষাগুলিও যাতে সম মর্যাদায় ভাস্বর থাকতে পারে, তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বোর্ডের চেযারপার্সন সুনীল মাহাতোও।’’

পুরুলিয়া জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের হলঘরে দফতরের উদ্যোগে একটি অনুষ্ঠান হয়। কাশীপুর তরুণ সঙ্ঘ গ্রন্থাগারের উদ্যোগে বিবেকানন্দ হলে মাতৃভাষার শহিদদের সম্পর্কে আলোচনা ছাড়াও গান-কবিতায় সাজানো অনুষ্ঠান হয়েছে।

Advertisement

পুরুলিয়া শহরে লেখক শিল্পী সঙ্ঘের উদ্যোগে এবিপিটিএ হলে মাতৃভাষার স্মরণে একটি অনুষ্ঠান হয়। পুরুলিয়া চিত্তরঞ্জন উচ্চ বিদ্যালয়ে এই দিনটির গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনাসভা হয়। পুরুলিয়া শহরের নীলকুঠিডাঙা ক্লাবেও বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়।

আদ্রার বেকো গ্রামে স্থানীয় পঞ্চায়েত ও বেকো অঞ্চল গ্রন্থাগারের উদ্যোগে এ দিন সকালে বসে আঁকো, আবৃত্তি, গান, ক্যুইজের প্রতিযোগিতা হয়।।পরে দুপুরে পঞ্চায়েতের সামনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনাসভা হয়। পঞ্চায়েতের প্রধান কাজল ভট্টাচার্য-সহ ছিলেন স্থানীয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও পড়ুয়ারা।

এ দিন সকালে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের তরফে একটি প্রভাতফেরির আয়োজন করা হয় বাঁকুড়া শহরে। বাঁকুড়ার বঙ্গ বিদ্যালয় থেকে ওই পদযাত্রার সূচনা হয়। উপস্থিত ছিলেন জেলার তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের আধিকারিক রানা দেবদাশ। বাঁকুড়া গার্লস প্রাইমারি স্কুলে ভাষা দিবস উপলক্ষে সাত দিন ব্যাপী মাতৃভাষায় গল্প বলা, বক্তৃতা ও হাতের লেখার একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীনবন্ধু ভূষণ জানান, ওই প্রতিযোগিতায় স্কুলের প্রায় দুশো ছাত্রী যোগ দেয়। এ দিন ওই প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হয়।

বড়জোড়া গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে ছাত্রছাত্রীদের বই দেয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। উপস্থিত ছিলেন বড়জোড়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায়। বড়জোড়া গ্রাম দীপাবলী সব পেয়েছির আসরের উদ্যোগে বড়জোড়া থানার মাঠে ভাষা দিবস উপলক্ষে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রামহরিপুর রামকৃষ্ণ মিশন হাইস্কুলের পড়ুয়াদের সামনে ভাষা দিবস নিয়ে বক্তব্য রাখেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বামী তাপহরানন্দ। সাহিত্য পত্রিকা ‘যোগাযোগ’-এর উদ্যোগে এ দিন রাইপুরে ভাষা দিবস উপলক্ষে পদযাত্রা ও নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় রাইপুর ব্লক কমিউনিটি হলে।

বিষ্ণুপুর মহকুমা গ্রন্থাগার এবং চারণকবি বৈদ্যনাথ সাহিত্য আকাদেমির সহায়তায় এ দিন মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের উদ্যোগে অনুষ্ঠানন হয় মহকুমা গ্রন্থাগারে। মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক রামশঙ্কর মণ্ডল জানান, আলোচক ছিলেন বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার বিভাগীয় প্রধান দেবাশিস মজুমদার। ছিল প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা, কবি সম্মেলনও। স্কুল ছাত্রীরা সমবেত নৃত্য, গান, আবৃত্তি পরিবেশন করে।

রাধানগর বোর্ড প্রাথমিক স্কুলের খুদে ছাত্রছাত্রী মুক্তমঞ্চে কাঠি নাচ, সমবেত সঙ্গীত ও নাটক পরিবেশন করে। প্রধান শিক্ষক দিলীপকুমার কুম্ভকার বলেন, ‘‘তিন দিন ধরে নাটকের কর্মশালা হয়েছে।’’ জঙ্গলের গাছ না কাটা, শুকনো পাতায় আগুন না ধরানো, প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করা, সাপে কামড়ালে কী করা উচিত তা নিয়ে নাটক— আমাদের গ্রাম।

পাত্রসায়রের পাণ্ডুয়া গ্রামে নাড়িচা সর্বমঙ্গলা বিদ্যাপীঠ বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং মাতৃভাষা দিবস পালন করল এক সাথে। প্রধান শিক্ষক গৌরচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জানান, দু’দিন ধরে চলবে আমাদের অনুষ্ঠান। আবৃত্তি, গান, গল্প বলা, অঙ্কন ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা হচ্ছে। প্রথম দিন দলগত বিভাগে আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের সাঁওতাল নৃত্য ছিল। আজ বৃহস্পতিবার আধুনিক গান, বিতর্ক ও ক্যুইজ রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement