দীপাবলিতে শান্তিনিকেতনে ছাতিমতলায় আলোকসজ্জা। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
দাপট অনেক কম। কিন্তু, সন্ধ্যা হতে দুবরাজপুর, বোলপুর, রামপুরহাট মহকুমার গ্রামীণের কিছু এলাকায় জানান দিল শব্দবাজি। একই সঙ্গে জেলাবাসীর অনেকের অভিজ্ঞতা, এ বার তাণ্ডবের ছবি অনেক কম। তাঁরা জানাচ্ছেন, সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত জেলায় বাজি ফাটার তেমন শব্দ কানে আসেনি। কোন বাজি ফাটবে এই বিতর্ক এড়াতে পুলিশও চেয়েছিল বাজারে যাতে বাজি বিক্রি না হয়। ছিল তল্লাশি, ধরপাকড়। এতে বুধবার ভূত চতুর্দশীর রাতে বাজির আওয়াজ প্রায় শোনা যায়নি বললেই চলে। কালীপুজোর রইল তার রেশ।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘যে ভাবে জেলার প্রতিটি কোণায় নজরদারি চালানো হয়েছে তাতে কালীপুজো ও দীপাবলিতে বাজি ফাটবে না। দূষণহীন থাকবে জেলা।’’ বাজি পুরোপুরি নিষিদ্ধ নয় কালীপুজো, দীপাবলিতে। বাজি ফাটানো নিয়ে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও কলকাতা হাইকোর্টের পৃথক অবস্থান শেষে সুপ্রিম কোর্ট এমন নির্দেশ দিয়েছে। শর্ত একটাই, আদালত নির্ধারিত সময় মেনে কেবল পরিবেশবান্ধর ‘সবুজ’ বাজি পোড়ানো যাবে। পরিবেশ দূষণ রোধে সেই নির্দেশ পালন হচ্ছে কিনা সেটা দেখার ভার আদালত দিয়েছিল পুলিশ, প্রশাসনের উপরেই।
কিন্তু, কেন্দ্রীয় সংস্থা পেট্রলিয়াম অ্যান্ড সেফটি অর্গানেইজেশন (পেসো) অনুমোদিত সবুজ বাজি এত দ্রুত জেলার বাজি বিক্রেতারা এনে বিক্রি করতে পারবেন না সেটা আন্দাজ করেছিল পুলিশ। সমস্যা ছিল যাচাই করারও। কারণ, অধিকাংশ বাজি বিক্রেতার কোনও ধারনা নেই সবুজ বাজি বস্তুটি কী। ফলে বাজি বিক্রিতে ছাড় দিলে দেদার নিষিদ্ধ বাজি ছেয়ে যাবে, এই আশঙ্কা করে বাজি বিক্রি বন্ধে কড়াকড়ি শুরু হয়। ধড়পাকড় ছাড়াও বাজেয়াপ্ত হয় নিষিদ্ধ বাজি। তাতে জেলায় ক্রেতা ও বিক্রেতা সকলেই বাজি থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেছেন বলে খবর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বাজি না ফাটার নেপথ্যে অন্যতম কারণ সেটাই। যেটা অন্যবার ঘটে না। তা মানছে পুলিশ।
জেলার বাসিন্দাদের অনেকে বলছেন, কে আর পয়সা খরচ করে ঝামেলা কিনবে মশাই। প্রতিবার কলকাতা থেকে এনে বাজি ফাটান দুবরাজপুরের এক যুবক। তিনি বলছেন, ‘‘ইচ্ছে ছিল এবারও সেটাই করার। কিন্তু, পুলিশের ধড়পাকড়ে সাহস পাচ্ছি না। এক বাজি বিক্রেতাকে বলে রেখেছিলাম বাজি দিতে। সেও সাহস করছে না।’’ তবে বেশি রাতে দেদার বাজি ফাটতে পারে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। তাঁরা আবার বলছেন, ‘‘প্রকাশ্য রাস্তায় না ফাটিয়ে বাড়ির ছাদে ফাটালে কে আর দেখতে যাচ্ছে সবুজ না লাল বাজি ফাটছে।’’ এই সময়ে পুলিশের নজরদারি নিয়েও ধন্দ থাকছে।