পোড়ামাটির কাজ দেখছেন ইতালির শিল্পীরা। নিজস্ব চিত্র
পোড়ামাটির শহরে এলেন ইতালির শিল্পীরা। সঙ্গে ছিলেন কলকাতায় অবস্থিত ইতালি দূতাবাসের ডেপুটি কনসাল জেনারেল ভিনসেনজা বুফালো। তাঁরা বললেন দুই দেশের সাংস্কৃতিক সমন্বয়ের কথা।
একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দীর্ঘ দিন ধরে বিষ্ণুপুরের শিল্প ও সংস্কৃতিকে আন্তর্জাতিক স্তরে তুলে ধরার কাজ করে চলেছে। তারাই এই আয়োজন করেছিল।
শিল্পীদের দলে ছিলেন আন্দ্রিয়া আনাস্তাসিয়া। তিনি জানান, ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সূত্র ধরে চন্দননগরের আলো নিয়ে কাজ করেছেন। বিষ্ণুপুরের প্রাচীন ঐতিহ্য নিয়েও তাঁর আগ্রহ রয়েছে। নিজের শিল্পে এই সংস্কৃতির প্রতিগ্রহণ করতে চান।
আন্দ্রিয়া বলেন, ‘‘আমরা এই প্রথম বিষ্ণুপুরে এলাম। টেরাকোটার স্থাপত্য, মাকড়া পাথরের কারুকার্য অত্যন্ত সুন্দর। পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশের স্থপতিদের বিষ্ণুপুরের প্রাচীন টেরাকোটা নিয়ে কিছু করা উচিত। ইতালির বিভিন্ন ভাষ্কর্যের সঙ্গে এই স্থাপত্য এবং ইতিহাস পাশাপাশি রেখে পর্যালোচনা করা দরকার।’’ ইতালির আর এক শিল্পী দাভিদে কুয়াদ্র বলেন, ‘‘এখানে অনেক স্থাপত্য ধ্বংসের মুখে। সেগুলি সংরক্ষণের চেষ্টা দুই দেশের তরফেই সম্ভব।’’
বিষ্ণুপুরের রাসমঞ্চ, পাঁচচূড়া মন্দির, দলমাদল কামান দেখে ইতালির অতিথিরা মুগ্ধ। কিন্তু যুগলকিশোর মন্দির এবং মহাপ্রভু মন্দিরের জরাজীর্ণ দশা দেখে অবাক হয়েছেন তাঁরা। স্থাপত্যের গায়ে বট-অশ্বত্থের বাড়বাড়ন্ত। কেন এমন অবস্থা, স্থানীয় লোকজনের কাছে জানতে চান শিল্পীরা। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের সঙ্গে এই ব্যাপারে তাঁরা কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন দূতাবাসের ডেপুটি কনসাল জেনারেল ভিনসেনজা বুফালো।
এ দিন বিষ্ণুপুর মহকুমা দফতর থেকেও বিদেশী দূতাবাসের অধিকর্তা ও শিল্পীদের সম্মান জানানো হয়। মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডল বলেন, “সারা বছর ধরেই বিদেশী পর্যটকের আসা যাওয়া থাকে এই শহরে। তবে দুই দেশের শিল্পকলার সমন্বয়ের ভাবনা বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্যকে আরও সমৃদ্ধ করবে।’’