ফের মাটির নীচে কেব্ল কেটে পুরুলিয়ায় বিপর্যস্ত হল বিএসএনএলের মোবাইল পরিষেবা। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার পর থেকে প্রায় গোটা প্রায় জেলা জুড়ে পরিষেবা অচল হয়ে যায়। মোবাইলের স্ক্রিনে সিগন্যাল থাকা স্বত্ত্বেও কী কারণে ফোন কাজ করছে না তা নিয়ে রীতিমতো ধন্দে পড়েন গ্রাহকেরা।
গ্রাহকেরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার পর থেকেই পুরো পরিষেবা অচল হয়ে পড়ে। দিনান্তে কাজের শেষে যাঁদের বাড়ি ফিরতে হয় পরিষেবা অচল হয়ে পড়ায় তাঁরা বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে নাকাল হন। পুরুলিয়া জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ উত্তম বন্দ্যোপাধ্যায়ের খেদ, ‘‘মাঝে মধ্যেই বিএসএনএলের পরিষেবা বিগড়ে যাচ্ছে। কিন্তু কাজের দিনে সকাল থেকে কোনও ফোন না করা গেলে খুব সমস্যা হয়।’’ তিনি জানান, এখন জেলাজুড়ে স্বাস্থ্য দফতরের মশাবাহিত রোগের টীকাকরণ কর্মসূচি চলছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। বেশ কিছু স্বাস্থ্যকর্মী তাঁকে জানিয়েছেন, বিএসএনএল পরিষেবা অচল হয়ে পড়ায় সহকর্মীদের সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করতে না পারায় কাজে সমস্যা হয়েছে।
সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নচিকেতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘এ দিন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ল্যান্ডলাইন ও ইন্টারনেট পরিষেবাও কাজ করেনি। বিএসএনএলের ইন্টারনেট পরিষেবা অচল হয়ে পড়ায় খুব ভোগান্তির মধ্যে দিনটা গেল।’’ কলেজে অনলাইনে ভর্তির আবেদন করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন ছাত্রছাত্রীরাও। পুরুলিয়া শহরের একটি সাইবার কাফের মালিক তন্ময় সরকার বলেন, ‘‘ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় ছাত্রছাত্রীদের ফিরিয়ে দিতে হয়েছে।’’ গ্রাহকদের প্রশ্ন, মাটির নীচে থাকা কেব্ল ছিঁড়ে বা কেটে গিয়ে বিএসএনএলের পরিষেবা অচল হয়ে পড়ার ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু বারবার এই কারণে দিনভর পরিষেবা অচল হয়ে পড়বে কেন? কেন বিকল্প কোনও ব্যবস্থা থাকবে না? অনেকে এর পিছনে অন্তর্ঘাতেরও আশঙ্কা করছেন। এক গ্রাহকের ক্ষোভ, ‘‘বেসরকারি মোবাইল সংস্থাগুলির পরিষেবা তো এ ভাবে অচল হয়ে পড়ছে না? দফতরের আধিকারিকদের বিষয়টি দেখা উচিত।’’
টেলিকম দফতর সূত্রের খবর, পুরুলিয়া-বাঁকুড়ার মধ্যে কেব্ল কেটে গেলে জেলার পরিষেবা সচল রাখার জন্য আসানসোল হয়ে একটি বিকল্প রুট (লাইন) রয়েছে। কিন্তু সেই রুটও নিতুড়িয়া ও রঘুনাথপুরের মধ্যে কাটা পড়ে রয়েছে গত সেপ্টেম্বর থেকে। এই রুটটিও অচল থাকায় বাঁকুড়া-পুরুলিয়া লাইনে কাটা পড়লে বারবার পরিষেবা অচল হয়ে যাচ্ছে। খড়গপুর সার্কেলের জেনারেল ম্যানেজার (মোবাইল) মীরা মাডি বলেন, ‘‘পুরুলিয়া-বাঁকুড়ার মধ্যে ওএফসি (অপটিক ফাইবার কেব্ল) কেটে যাওয়ায় পুরুলিয়ার পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। দুপুরের পরে পরিষেবা অনেকটাই সচল হয়ে গিয়েছে বলে আমাদের কাছে খবর রয়েছে। আসানসোল রুটটির কী অবস্থা তা তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।’’ যদিও পরিষেবা স্বাভাবিক হতে বিকেল গড়িয়ে যায়।