ছবি: সংগৃহীত।
বিশ্বভারতীর জনসংযোগ কার্যালয়ের উদ্যোগে তিন দিনের একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন হল শান্তিনিকেতনের লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে। পর্যটন মন্ত্রক ও রাজ্যের পর্যটন বিভাগ ওই সম্মেলনে সহায়তা করেছে। সম্মেলনের বিষয় ছিল, শান্তিনিকেতন ও বীরভূমে পরিবেশবান্ধব পর্যটনক্ষেত্রের উন্নয়নের ‘রোড ম্যাপ’।
আন্তর্জাতিক ভাবে পর্যটনের তালিকায় অনেক দিন আগেই ঠাঁই করে নিয়েছে শান্তিনিকেতন। দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে এখানকার প্রধান আকর্ষণ শান্তিনিকেতনের আশ্রমিক পরিবেশ তথা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। সেই অনুযায়ী এক দিকে যেমন বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যে মিশে রয়েছে আশ্রমিক পরিবেশে পড়াশোনা, অন্য দিকে পর্যটনক্ষেত্র হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেছে। এ ছাড়াও শান্তিনিকেতনের গ্রামাঞ্চল এবং পার্শ্ববর্তী জঙ্গল-সহ কোপাই, খোয়াই শহরের পর্যটকদের বিশেষ পছন্দের তালিকায় রয়েছে।
কোনও উৎসব না থাকলেও তাই বছরভর পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে এখানে। জনসংযোগ কার্যালয় সূত্রে খবর, শান্তিনিকেতন, শ্রীনিকেতন এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় পরিবেশবান্ধব পর্যটনক্ষেত্রের উন্নয়নের কথা ভেবেই এই উদ্যোগ। আশ্রম এলাকায় অনেক টোটো যাতায়াত করে, সেগুলিকে কোনও ভাবে ব্যাটারিচালিত ও পরিবেশবান্ধব করা যায় কি না, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। এ ছাড়াও ট্যুর গাইড হিসেবে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের কেউ-ই সাবলীল ভাবে ইংরেজি বলতে পারেন না। অথচ শান্তিনিকেতনে বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা কম নয়। অনেক ক্ষেত্রে পর্যটকেরা অভিযোগ করেন, গাইডের জানানো অনেক তথ্যেও ভুল থাকে। এ সব নিয়েও কথা হয়েছে।
তিন দিনের সম্মেলনে আন্তর্জাতিক বক্তা ছিলেন ছ’জন। চিনের ইয়াং হংবো, বাই তিনবিন, শ্রীলঙ্কার মারভিন ধর্মসিরি, ইন্দোনেশিয়ার দেউয়ি কুসুমাশান্তি। তা ছাড়াও ভুবনেশ্বর, নয়ডা, খড়গপুর, শিবপুর,কলকাতা ও দুর্গাপুরের বিভিন্ন বিভাগের ২২ জন প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন। সম্মেলনের মূল বিষয় ছাড়াও বীরভূমের নদী, মাটি, বিশ্বভারতীর ইতিহাস-সহ অন্য বিষয়েও আলোচনা করা হয়।
রবিবার সম্মেলনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রসারভারতীর প্রাক্তন সিইও জহর সরকার, কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের আঞ্চলিক ডিরেক্টর জে পি সও, বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন ও খড়গপুর আইআইটির স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক জয় সেন। বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার জানান, ২০১৭ থেকে জনসংযোগ কার্যালয়ের উদ্যোগে এ রকম সম্মেলনের আয়োজন করা শুরু হয়েছে। গত বছর ওই সম্মেলনে অনির্বাণবাবু ও বিশ্বভারতীর ইংরেজি বিভাগের প্রধান অমৃত সেনের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছিল ‘শান্তিনিকেতন: অ্যান ইন্ট্রোডাকসন ফর ভিসিটর্স’ বই। এ বার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে তাঁদেরই সম্পাদনায় প্রকাশিত হল ‘বসুন্ধরা: রবীন্দ্রনাথ টেগোর অন নেচার অ্যান্ড দি এনভাইরনমেন্ট’।