ইলামবাজারে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব

অভিযোগ নিতে থানাকে নির্দেশ আদালতের

থানা অভিযোগ নিচ্ছে না জানিয়ে আগেই শাসক দলের বিরোধীরা সরব হয়েছিলেন। এবার সেই থানার বিরুদ্ধে অভিযোগ না নেওয়ার, অভিযোগ তুলল খোদ শাসকদলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের এই ঘটনা ইলামবাজারে। সোমবার শাসকদলের এক গোষ্ঠী অভিযোগ জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার আর্জিতে দ্বারস্থ হল আদালতের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইলামবাজার শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৫ ০০:২৬
Share:

থানা অভিযোগ নিচ্ছে না জানিয়ে আগেই শাসক দলের বিরোধীরা সরব হয়েছিলেন। এবার সেই থানার বিরুদ্ধে অভিযোগ না নেওয়ার, অভিযোগ তুলল খোদ শাসকদলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের এই ঘটনা ইলামবাজারে। সোমবার শাসকদলের এক গোষ্ঠী অভিযোগ জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার আর্জিতে দ্বারস্থ হল আদালতের।

Advertisement

অভিযোগকারী তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের পক্ষে আইনজীবী ভাস্কর ঘোষ বলেন, “বোলপুরের এসিজেএম সঙ্ঘমিত্রা পোদ্দারের কাছে অভিযোগকারী বাসিন্দারা তাঁদের অভিযোগে অনধিকার বাড়িতে প্রবেশ, আগ্নেয়াস্ত্র-সহ ঢোকা, ভয় দেখানো, শ্লীলতাহানি করা-সহ ভারতীয় দণ্ড বিধির একাধিক ধারায় অভিযোগ জানিয়েছেন। এসিজেএম সংশ্লিষ্ট থানাকে মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন।”

ঘটনা হল, রবিবার বিকেলে ইলামবাজার থানার বিলাতি পঞ্চায়েতের জগদ্দলপুর, সুলতানপুর, গোলটিকুরি, আভাডাঙা-সহ আশেপাশের একাধিক গ্রামে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। অভিযোগ, ওই এলাকায় বালি তোলাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে বিবাদ দীর্ঘদিনের। রবিবার সন্ধ্যায় বোমাবাজি, বম, মাস্কেট নিয়ে এক অপরকে আক্রমণ করায় কার্যত তেতে ওঠে বিলাতি পঞ্চায়েত এলাকা। স্থানীয় জগদ্দলপুরের বাসিন্দা সরিনা বিবি, সাহানা বিবি, সাজিয়া বিবিদের অভিযোগ, ‘‘এলাকায় আমরা দীর্ঘ দিন ধরে তৃণমূল করি। সম্প্রতি বিজেপি থেকে কিছু দুষ্কৃতীকে দল এলাকায় দায়িত্ব দিয়েছে। বিজেপি থেকে সদ্য দলে আসা দাগী দুষ্কৃতী এলাকার শেখ নিয়ামত, শেখ খোদাবক্সের নেতৃত্বে জনা পনেরো দুষ্কৃতী লাঠি, রড, পিস্তল এবং বোমা নিয়ে আক্রমণ করে জগদ্দলপুরে। বাড়ি ঢুকে ভাঙচুর চালায়, লুটপাট করে প্রাণ নাশের ভয় দেখায়।’’ তাঁদের দাবি, ‘‘রবিবার ঘটনার পর ইলামবাজার থানায় খোদাবক্স-নিয়ামতদের নামে অভিযোগ জানাতে গেলে, থানা অভিযোগ নিতে চায়নি। অন্য গোষ্ঠীর অভিযোগ অবশ্য জমা পড়েছে তার আগেই। সেই কারণে পুলিশের উপর আস্তা হারিয়ে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’’ তাঁদের অভিযোগ, ‘‘অভিযুক্তরা রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের নাম নিয়ে এই কাণ্ড করেছে। এবং চন্দ্রনাথ বাবু তাঁদেরকে ওই এলাকার দায়িত্ব দিয়েছেন। পুলিশ অভিযোগ না নেওয়ায়, আইনজীবীর মারফৎ সুবিচারের আসায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’’

Advertisement

ইলামবাজার থানা কেন অভিযোগ নিল না?

থানার ওসি মহম্মদ আলি ফোন ধরেননি। এসএমএসের কোনও জবাব দেননি। জেলা পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারও ফোন ধরেননি। এসএমএসের উত্তরও দেননি।

এলাকার তৃণমূলেরই একাংশ জানিয়েছে, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি জাফারুল ইসলামের অনুগামীরা ওই এলাকায় বালি তোলার কাজে ছিল। সম্প্রতি দলের কার্যকরী সভাপতি তথা রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ ওই এলাকায় সংগঠন বাড়ানোর জন্য বিজেপি থেকে আসা শেখ নিয়ামত, শেখ খোদাবক্সদের ওই এলাকার দায়িত্ব দিয়েছেন। এবং তাতেই ইলামবাজার ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কর্মাধক্ষ জাফারুল ইসলাম গোষ্ঠীর ফজলুল হকের সঙ্গে বিবাদ বাধে খোদাবক্স-নিয়ামতদের।

সেই বিবাদ রবিবার সন্ধ্যায় ব্যাপক আকার নেয়। রাতে অবশ্য বোলপুরের সিআই চন্দ্রশেখর দাস, ইলামবাজার থানার ওসি মহম্মদ আলির নেতৃত্বে পুলিশ গিয়ে এলাকায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরায়। কিন্তু ততক্ষণে উভয় পক্ষের মধ্যে বোমাবাজি গোলাগুলি এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।

এ দিন অবশ্য তৃণমূলের ইলামবাজার ব্লক সভাপতি জাফারুল ইসলাম বলেন, “দলে কোনও গোষ্ঠী কোন্দল নেই। সম্পূর্ণ গ্রাম্য বিবাদ।” তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি তথা রাজ্যের মৎস্য মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “গোটা বিষয়টি সবিস্তারে খোঁজ নিয়ে দেখছি। দলে কোন বিবাদ নাই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement