একযোগে: কমিশনের সদস্যদের কােছ অভিযোগ জানাতে যাচ্ছেন আক্রান্তরা। শনিবার বোলপুরের একটি অতিথি নিবাসে। নিজস্ব চিত্র।
ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগগুলিতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে কি না তা দেখার জন্য শুক্রবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। শনিবার বীরভূমে ভোট পরবর্তী হিংসা খতিয়ে দেখতে আসেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পাঁচ সদস্য। এ দিন বিকালে বোলপুরের একটি সরকারি অতিথি নিবাসে লাভপুর, নানুর, বোলপুরের ভোট-পরবর্তী হিংসার শিকার হওয়া ৩০টি পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তাঁরা।
কী ঘটেছিল, কোন পরিস্থিতিতে তাঁরা দিন কাটাচ্ছেন কমিশনের সদস্যরা জানার চেষ্টার করেন ওই সমস্ত পরিবারগুলি সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি ভোট-পরবর্তী হিংসার দফায় দফায় উত্তপ্ত হতে দেখা গিয়েছিল বীরভূম জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায়। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হিংসার ঘটনা ঘটেছে লাভপুর, নানুর, ইলামবাজার এলাকায়। ভোট-পরবর্তী হিংসার কারণে এখনও ওই এলকার বহু মানুষ ঘরছাড়া বলে অভিযোগ। তাঁরা কোন অবস্থায় রয়েছেন, প্রশাসনিক সহযোগিতা পেয়েছেন কিনা, পরিবারগুলিকে ঘরে ফেরাতে স্থানীয় প্রশাসন কী পদক্ষেপ করেছে তা এ দিন জেলা প্রশাসনের কর্তাদের কাছ থেকেও জানার চেষ্টা করেন কমিশনের সদস্যরা।
ভোট-পরবর্তী হিংসার শিকার হওয়া ৩০টি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এক এক করে কমিশনের প্রতিনিধিরা কথা বলেন। অভিযোগের বিষয়গুলি বিশদে জানতে চান। সমস্ত অভিযোগ রেকর্ড এবং লিপিবদ্ধ করা হয়। যদিও এই সমস্ত বিষয়টিই হয় কার্যত রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে। এমনকি কথা বলার পরে কমিশনের প্রতিনিধিরা সরাসরি এই ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখও খুলতে চাননি। যাঁরা অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন, তাঁরাও কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পরে আর এ নিয়ে মুখ খোলেননি।
যে সমস্ত জায়গায় ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা ঘটেছিল আজ, রবিবার সেই সমস্ত জায়গায় যাওয়ার কথা রয়েছে মানবাধিকার কমিশনের সদস্যদের। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার হওয়া পরিবারের সদস্য ছাড়াও এ দিন দেখা করেন দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা, বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার জেলা সভাপতি শেখ সামাদ সহ জেলার বিজেপি নেতারা। অনুপ বলেন, “জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা এসেছেন ভোট পরবর্তী হিংসা খতিয়ে দেখতে। আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে হাজির ছিলাম। যাঁরা ভোট-পরবর্তী হিংসার শিকার হয়েছেন তাঁদের অনেকে এ দিন অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন। এটা কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। ওঁরা আমাদের ডেকে পাঠিয়েছিলেন যাতে অভিযোগকারীরা এসে নিজেদের কথা বলতে পারেন। আশা করছি কমিশনের কাছে সুবিচার পাবে ওই পরিবারগুলি।”