স্থানীয় সূত্রের দাবি, পুলিশ-প্রশাসনের সক্রিয়তাতেই হয় শান্তিপূর্ণ নির্বাচন।
দিন দশেক আগে রাজনগর ব্লকে আদিবাসী ল্যাম্পস (লার্জ সাইজড এগ্রিকালচার মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি) নির্বাচন ঘিরে রক্ত ঝরেছিল। বোমা-গুলির লড়াইয়ে নিহত হয়েছিলেন এক তৃণমূল কর্মী। ল্যাম্পসের ভোট ঘিরেই ১৪ জুন পাড়ুইয়ের সহিসপুরও বোমা, তির-ধনুকের লড়াইয়ে উত্তপ্ত হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রামপুরহাটের শালবাদরা এলাকার ল্যাম্পস হল কোনও গোলমাল ছাড়াই। সেখানে ৪৫ সদস্যের পরিচালন কমিটির বোর্ডে ২৭-১৮ ফলাফলে পর্যুদস্ত হয়েছে শাসকদলের সমর্থিত প্রার্থীরা।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, পুলিশ-প্রশাসনের সক্রিয়তাতেই এই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। এলাকার তৃণমূল নেতা, মাসড়া অঞ্চল সভাপতি বিপুল ঘোষ, মাসড়া অঞ্চলের প্রাক্তন প্রধান তৃণমূলের রেজাউল করিম, তৃণমূল কর্মী মইনুদ্দিন হোসেন, পঞ্চায়েত সদস্য দিলীপ কিস্কুরা জানিয়েছেন, মাসড়া অঞ্চলের সংস্কৃতিই হল শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। তা পঞ্চায়েত, লোকসভা হোক আর ল্যাম্পস। গোলমাল হয় না কোনও বারই। বিপুলবাবুর কথায়, ‘‘আমরা কেউই কখনও অশান্তি চাই না। তাই সব শান্তিতেই মিটেছে।’’
এ দিনের ভোটের দ্বিতীয় উল্লেখযোগ্য বিষয় হল বাম সমর্থিত প্রার্থীদের জয়। মাসড়া যদি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রতীক হয়, তা হলে ল্যাম্পসের ভোটের ধারাবাহিক জয়ও বামেদের রীতি। রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলের সদস্য, মাসড়া অঞ্চলের বাসিন্দা ফরওয়ার্ড ব্লকের সৌমেন মুর্মু বলেন, ‘‘এলাকায় ল্যাম্পস গঠিত হওয়ার পর থেকেই বামফ্রন্ট নেতৃত্ব পরিচালন সমিতিতে আছেন। মনোনয়ন দাখিলের পর স্ক্রুটিনিতে ছ’জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়। শুধু সে কারণেই ছ’টি আসন কম পেয়েছি আমরা। না হলে ফল আরও আমাদের পক্ষে থাকত।’’ সিপিএমের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মণ মনে করেন, এই নির্বাচন আবারও প্রমাণ করল ল্যাম্পসের ভোটে মানুষ শুধু বামেদেরই চান।
কেন খারাপ ফল?
এলাকার বিধায়ক, মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওখানে তো আগে মুখে মুখে কমিটি গঠন করে সদস্য করা হতো। এ বার তবু লড়াইটা হয়েছে। ১৮ জন জিতেছেনও। এটা কম কী?’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসড়া অঞ্চলের ৩৩টি গ্রামের মধ্যে ২৯টি আদিবাসী গ্রাম নিয়ে শালবাদরা ল্যাম্পস। মোট সদস্য ২,৩৩৩ জন। এ দিন পরিচালন কমিটির ৪৫ জন সদস্যের নির্বাচন ছিল। ১,৫৮৯ জন সদস্য এ দিন নির্বাচনে যোগ দিয়েছিলেন। নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ, প্রশাসন প্রথম থেকেই সজাগ ছিল। পুশিরে সক্রিয়তাতেই গোলমাল এড়ানো গিয়েছে বলেও মনে করেন স্থানীয়দের একটি অংশ। তবে এ ব্যাপারে বীরভূম জেলা পুলিশের সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার কোনও মন্তব্য করতে চাননি।