মানবাজারে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির সমাবেশ। —নিজস্ব চিত্র।
সঙ্গে নেই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। আশা কর্মীরাও নেই। তাঁদের মতোই স্বনির্ভর দলের সদস্যেরা প্রায় সবাই এখন তৃণমূলের শিবিরে। তারপরেও মানবাজারে সিপিএমের মহিলা শাখা সংগঠন ‘ভারতীয় গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি’র জেলা সম্মেলনের জমায়েতে উপচে পড়ল ভিড়! রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের ভরা বাজারে সিপিএমের মহিলা সংগঠনের সভায় এত মহিলা সমর্থক কোথা থেকে এলেন, সেটাই এখন স্থানীয় রাজনীতিতে চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে।
গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির দাবি, সমাবেশে সম্মেলনে আসা বহিরাগত প্রতিনিধির সংখ্যা ছিল ২০০ এর কিছু বেশি। বাকি সবাই মানবাজার বিধানসভা এলাকার বাসিন্দা। এই ভিড়ে উৎসাহীত সিপিএম শিবির। দলের মানবাজার লোকাল কমিটির সম্পাদক সজল চক্রবর্তীর দাবি, সম্মেলনে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মহিলা উপস্থিত হয়েছিলেন। শনিবার সম্মেলনের প্রথম দিন মানবাজারে মহিলা সমিতির মিছিল ও সভা হয়। রবিবার বিকেলে সম্মেলন শেষ হয়। তবে পুলিশের দাবি, মানবাজার পার্ক রোডের ওই এলাকায় দুই থেকে আড়াই হাজার লোক ধরতে পারে। ওই এলাকা জমায়েতে প্রায় ভরে গিয়েছিল। সিপিএম নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, এই ভিড় দেখে তাঁদের উৎসাহের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। মানবাজারের ১০টি পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, বিধানসভা ও সাংসদ— সবই তৃণমূলের। এমনকী মানবাজার কেন্দ্রের বিধায়ক সন্ধ্যারানি টুডু বর্তমানে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী। সম্মেলনের প্রধান বক্তা মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রেখা গোস্বামীর দাবি, ‘‘শাসক দলের সন্ত্রাস, লোভ এবং হুমকি ইত্যাদি নানা কারণে আমাদের সমিতির সদস্য সংখ্যা কিছুটা হ্রাস পেয়েছিল ঠিকই। কিন্তু দুর্নীতি, স্বজনপোষণ-সহ নানা কারণে শাসকদলের প্রতি সাধারণ মানুষের মোহ একটু একটু করে ভাঙছে। তাই সমিতির ডাকে ফের মানুষ আসছেন। পুরুলিয়া জেলাতেই এখন সমিতির সদস্য সংখ্যা প্রায় দু’লক্ষ।’’ আবার ডিওয়াইএফের জেলা সম্পাদক মানবাজারের বাসিন্দা ত্রিদিব চৌধুরী এককদম এগিয়ে দাবি করেন, স্বনির্ভর দল, আশা কর্মী এবং অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরাও সমিতির সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁরা নানা প্রত্যাশা নিয়ে তৃণমূলে গেলেও তা না পাওয়ায় ফিরে আসছেন।
তবে এ নিয়ে মানবাজারের বিধায়ক সন্ধ্যারানিদেবীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। যদিও এই সমাবেশকে আমল দিতে রাজি নন মহিলা তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী নিয়তি মাহাতো। তিনি মানবাজার ব্লক এলাকা থেকে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ হয়েছেন। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘প্রচারের জন্য বাইরে থেকেও লোক ধরে এনে সভা ভরাতে পারে ওরা। তবে তেমন লোক হয়েছে বলে শুনিনি।’’
তবে এই ভিড়েই সিপিএম খুশি। রবিবার সম্মেলন শেষে প্রাক্তন মন্ত্রী বিলাসীবালা সহিসকে সমিতির জেলা সম্পাদক করে ৫১ জনের জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়।